শাওনের জোড়া আঘাতে ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ


প্রকাশিত: ১০:০১ এএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন ধীরে ধীরে বাস্তব হয়ে উঠছে বাংলাদেশের। মেহেদী হাসান মিরাজদের সামনে একের পর এক ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরাচ্ছে বাংলাদেশের বোলাররা। মেহেদী হাসান মিরাজের জোড়া আঘাতের পর শাওনের তোপের মুখে আউট হয়েছিলেন কিচি কার্টি। এরপর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা আরেক ব্যাটসম্যান শিমরন হেতমায়েরকে ফিরিয়ে জয়ের সম্ভাবনা তৈরী করেছিলেন সাইফুদ্দিন।

৫৯ বলে ৬০ রান বাংলাদেশের সামনে রীতিমত আতঙ্কের নামে পরিণত হয়ে উঠছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক শিমরন হেতমায়ের। ৭টি বাউন্ডারি আর ১টি ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে হেতমায়েরকে সাজঘরের পথ দেখালেন সাইফুদ্দিন। ২৮তম ওভারের ৩য় বলটি ছিল স্লো। হেতমায়ের বিগ শটই খেলতে চেয়েছিলেন।কিন্তু বল ব্যাটের কানায় উপরে উঠে গেলেন সাইফ হাসান দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত করেন হেতমায়েরের সেই শটকে। ১৪৭ রানে পড়লো ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেট।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধীরে ধীরে জয়ের দিকেই নিয়ে যাচ্ছিল শ্যামার স্প্রিঙ্গার এবং জিড গুলি। দু’জনের ৩০ রানের জুটি যখন বাংলাদেশের সামনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল, তখনই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন সালেহ আহমেদ শাওন। ৩৮তম ওভারে তার জোড়া আঘাতে সাজঘরে ফিরে গেলেন জিড গুলি এবং কেমু পল। ১৭৭ রানে গুলিকে ফেরানোর কেমু পলকে আউট করলেন ১৮১ রানের মাথায়।

এর আগে মিরাজের জোড়া আঘাতের পর ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার বোলার শাওন। ভয়ংকর হয়ে ওঠা কার্টিকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন এই টাইগার বোলার। আর এর মধ্য দিয়ে শিমরন হেটমায়ার আর কেচি কার্টির ৬২ রানের জুটি ভেঙ্গে টাইগার যুবাদের খেলায় ফেরাল শাওন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যারিবীয়দের সংগ্রহ ৩৮.৪ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান। জয়ের জন্য এখনও ৪৪ রান প্রয়োজন ওয়েস্ট ইন্ডিজের।  

এর আগে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ২২৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝড়ো শুরুর পর দ্রুত দুই উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাটিংয়ে লড়াকু ফিফটি করা অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজই মিরপুরে জোড়া ব্রেক-থ্রু এনে দেন।

বৃহস্পতিবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মিরাজের অর্ধশতকের উপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২২৬ রান সংগ্রহ করেছে টাইগার যুবারা। তবে  শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ওপেনার পিনাক ঘোষের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই তিনি ফিরে যান সাজঘরে। এরপর সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই পিনাককে অনুসরণ করেন আরেক ওপেনার সাইফ হাসান। ১৬ বল খেলে ব্যক্তিগত ১০ রান করে দলীয় ২৭ রানের সময় আউট হয়ে যান তিনি।

এমন অবস্থায় দলকে কিছুটা এগিয়ে যান জয়রাজ শেখ এবং নাজমুল হোসাইন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে দুজনে মিলে গড়েন ৩১ রানের জুটি। তবে ১৩তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৫৮ রানে হেটমায়েরের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন শান্ত। ২৪ বল খেলে তিনি করেন ১১ রান। জাকিরকে নিয়ে সে ধাক্কাও সামলে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন জয়রাজ। কিন্তু ব্যক্তিগত ৩৫ রানে জয়রাজের বিদায়েই আরেকটি আশা জাগানো জুটির সলিল সমাধি ঘটে ৩০ রানেই। পরে জাকিরও ২৪ রানে হোল্ডারের বলে স্ট্যাম্প হারিয়ে সাজঘরে হাঁটা দেন।

এরপর দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন যুবাদের অধিনায়ক মিরাজ। ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এই ব্যাটসম্যান। এই দুজনের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি গড়ে ফেরার সময় ৬০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন মিরাজ। তার ৭৪ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি চারের মার। মিরাজের পরের বলে অবশ্য সাইফউদ্দিনও বিদায় নেন। তার ব্যাট থেকে আসে মূল্যবান ৩৬ রান। দুটি উইকেটই নেন কেমো পল। শেষ দিকে মোসাব্বেক হোসেন ১৪ আর রানা ১০ রান করলে ২২৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

আইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।