বৃষ্টিতে এসি ঘামলে বা পানি পড়লে যা করবেন

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ০১ জুন ২০২৫

বৃষ্টির সময় অনেকেই লক্ষ্য করেন যে ঘরের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) হঠাৎ করে ঘামতে শুরু করে, পানি চুঁইয়ে পড়ে বা দেয়াল বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। এটি শুধু বিরক্তিকর নয়, বরং ঘরের আসবাব ও দেয়ালের ক্ষতির কারণও হতে পারে।

বৃষ্টির সময় বাতাসে আর্দ্রতা অনেক বেশি থাকে, ফলে ঘামের প্রবণতা বেড়ে যায়। বাইরের ইউনিটে বৃষ্টির পানি সরাসরি ঢুকলে অভ্যন্তরীণ অংশেও প্রভাব পড়ে। রুম ভেতরে বন্ধ থাকায় আর্দ্রতা বের হতে না পারায় সমস্যা তীব্র হয়।

বিজ্ঞাপন

বৃষ্টির সময় এসি ঘামা বা পানি পড়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করলে এটি দীর্ঘমেয়াদে ঘরের স্থাপনা এবং এসির কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে। সময়মতো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই এ সমস্যা এড়ানো যায়।

চলুন জেনে নিই কেন এমনটা হয় এবং এর সমাধান কীভাবে করা যায়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বৃষ্টির সময় এসির ইউনিট থেকে পানি পড়া বা ঘামা মানে হলো এসির অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক অংশে অতিরিক্ত আর্দ্রতা জমছে বা পানি নিষ্কাশনের পথ সঠিকভাবে কাজ করছে না। এটি বেশ কিছু কারণে হতে পারে। যেমন-

১. কনডেনসেট ড্রেন ব্লক হয়ে যাওয়া

এসি যখন বাতাস ঠান্ডা করে, তখন বাতাসের আর্দ্রতা তরলে পরিণত হয়ে কনডেনসেট নামে ড্রেন পাইপ দিয়ে বাইরে চলে যায়। এই পাইপে ময়লা, শেওলা বা ধুলা জমে গেলে পানি জমে গিয়ে ইউনিট থেকে পড়তে পারে।

২. ইনডোর ইউনিটের ইনসুলেশন নষ্ট হওয়া

যদি ইনডোর ইউনিটের ইনসুলেশন (তাপ প্রতিরোধক স্তর) নষ্ট হয়ে যায়, তবে ঠান্ডা পাইপের বাইরের অংশে আর্দ্রতা জমে ঘাম হয়, বিশেষ করে যখন বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে যেমন বৃষ্টির সময়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

৩. এয়ার ফিল্টার ব্লক হওয়া

এসির ফিল্টার যদি ধুলা ও ময়লায় ব্লক হয়ে যায়, তখন বায়ু প্রবাহ ব্যহত হয়। এতে কুলিং কয়েল অতিরিক্ত ঠান্ডা হয়ে বরফ জমতে পারে, এবং পরে তা গলে পানি চুঁইয়ে পড়ে।

৪. অপ্রয়োজনীয় ফ্রিওন বা গ্যাস সমস্যা

অতিরিক্ত বা অপর্যাপ্ত গ্যাস থাকলে এসির ভেতর তাপমাত্রা ভারসাম্যহীন হয়। এতে কয়েল জমে গিয়ে পরে গলে পানি পড়তে পারে।

৫. এসির ইনস্টলেশন ভুলভাবে হওয়া

ইনডোর ইউনিট যদি সঠিক কাত বা ঢাল দিয়ে ইনস্টল না হয়, তাহলে পানি ঠিকমতো ড্রেন লাইনে যাবে না এবং ইউনিট থেকে চুঁইয়ে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

জেনে নিন কীভাবে এর সমাধান ও প্রতিকার করতে পারেন

১. ড্রেন লাইন পরিষ্কার করুন

প্রতিবার গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগে এবং মাঝে অন্তত একবার ড্রেন পাইপ পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে টেকনিশিয়ানের সাহায্য নিন।

২. ইনসুলেশন ঠিক আছে কি না চেক করুন

ঠান্ডা পাইপের চারপাশে রাবার বা ফোম ইনসুলেশন ঠিকঠাক আছে কি না দেখুন। না থাকলে নতুন ইনসুলেশন লাগান।

৩. এয়ার ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন

প্রতি ১৫-৩০ দিন অন্তর ফিল্টার পরিষ্কার করুন। এতে বায়ুপ্রবাহ ঠিক থাকবে এবং অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা বরফ জমবে না।

বিজ্ঞাপন

৪. গ্যাস প্রেসার পরীক্ষা করুন

ফ্রিওন বা গ্যাসের চাপ ঠিক আছে কি না একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দিয়ে পরীক্ষা করান।

৫. ইনস্টলেশনের ঢাল ঠিক আছে কি না দেখুন

ইনডোর ইউনিট সামান্য সামনে ঝুঁকে থাকতে হবে যাতে পানি ঠিকমতো ড্রেন হয়।

৬. রুমে হিউমিডিটি কন্ট্রোল করুন

রুমে হিউমিডিটি কমাতে ডিহিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন, অথবা রুম মাঝে মাঝে খুলে দিন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

৭. পেশাদার সহায়তা নিন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

যদি দেখেন একাধিকবার পরিষ্কার করেও যদি পানি পড়ে, এসি বন্ধ করলেও পানি ঝরে যায়, ইনডোর ইউনিটের চারপাশে প্লাস্টার ভিজে যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই একজন পেশাদার এসি টেকনিশিয়ানের সাহায্য নিন।

আরও পড়ুন

কেএসকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।