বছর শেষে ডিসকাউন্টে পুরোনো ফোন কিনলে যা মাথায় রাখবেন

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
পুরোনো ফোন কেনার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন

বছর শেষে বিভিন্ন ব্র্যান্ড বা শোরুমে ডিসকাউন্ট থাকে। এখানে নতুন-পুরোনো ফোন, ব্যবহৃত ফোন বা সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনা যায় খুব কম দামে। ডিসকাউন্টে পুরোনো ফোন কেনা অর্থ সাশ্রয়ের একটি ভালো উপায় তবে তাড়াহুড়ো করলে প্রতারণা বা প্রযুক্তিগত সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি থাকে।

তাই শুধু দাম দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল কেননা অনেক ঝামেলা, প্রতারণা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকতে পারে। নিচে পুরোনো ফোন কেনার ক্ষেত্রে যেসব গুরুত্বপূর্ণ ফিচার ও চেকলিস্ট দেখে নিবেন আসুন জেনে নেই-

ফোনের ব্র্যান্ড, মডেল ও বয়স
বছর শেষে ডিসকাউন্টে পুরোনো ফোন কেনার আগে প্রথমেই দেখুন ফোনটি কোন ব্র্যান্ড ও মডেলের এবং কত বছরের পুরোনো। কারণ খুব বেশি পুরোনো মডেল হলে সেটি সফটওয়্যার আপডেট নাও পেতে পারে, ফলে অ্যাপ ব্যবহার, নিরাপত্তা এবং পারফরম্যান্সে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এমন মডেল বেছে নিন যা এখনো সফটওয়্যার সাপোর্ট পাচ্ছে বা কমপক্ষে মৌলিক অ্যাপগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে চালাতে সক্ষম।

আইএমইআই নম্বর যাচাই
ফোন কেনার আগে অবশ্যই আইএমইআই নম্বর চেক করে নিন। *#০৬# ডায়াল করলে সহজেই আইএমইআই দেখা যায়। এই নম্বর দিয়ে জানা যায় ফোনটি চুরি হয়েছে কি না, ব্ল্যাকলিস্টেড কি না, এমনকি রেজিস্ট্রেশন বৈধ কি না। আইএমইআই বিষয়ে বিক্রেতা যদি ঘোরাঘুরি করে, তাহলে সেই ফোন না নেওয়াই ভালো কারণ এতে আইনি ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

ব্যাটারির স্বাস্থ্য
পুরোনো ফোনের সবচেয়ে বড় সমস্যা আসে ব্যাটারিতে। অনেক সময় ফোনটি দেখতে ভালো থাকলেও চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যায়। তাই ব্যাটারি হেলথ ৮০-৮৫ শতাংশের নিচে হলে ধরে নিতে হবে শিগগিরই ব্যাটারি বদলাতে হতে পারে। আর ব্যাটারি পাল্টানো হলে সেটি আসল নাকি লোকাল, সেটিও সম্ভব হলে জেনে নিন।

ডিসপ্লে ও টাচ
ডিসকাউন্টেড বা ব্যবহৃত ফোনে বেশিরভাগ সময় সমস্যায় পড়ে ডিসপ্লে। স্ক্রিনে লাইন, কালার ব্লিড, ডেড পিক্সেল অথবা টাচে ল্যাগ আছে কি না পরীক্ষা করুন। অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত স্ক্রিন দেওয়া থাকে, যা দেখতে ভালো হলেও টাচ রেসপন্স ধীর হতে পারে। তাই ভালোভাবে পরীক্ষা না করে ফোন কিনবেন না।

ক্যামেরা, সাউন্ড ও মাইক্রোফোন
ফোন কিনে পরে যেন আফসোস না হয়, তাই সামনের পিছনের উভয় ক্যামেরা দিয়ে ছবি ও ভিডিও তুলে দেখে নিন। এছাড়া স্পিকার, রিংটোন সাউন্ড, কল অডিও এবং মাইক্রোফোন ঠিকঠাক আছে কি না যাচাই করা জরুরি। কারণ এগুলো নষ্ট হলে ব্যবহারিক সুবিধা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।

কানেক্টিভিটি ও সেন্সর
ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিকমতো কাজ করছে কি না নিশ্চিত হোন। এর পাশাপাশি প্রোক্সিমিটি, জাইরোস্কোপ ও অ্যাম্বিয়েন্ট সেন্সর কাজ করছে কি না পরীক্ষা করুন। অনেক সময় রিপেয়ার্ড ফোনে এসব সেন্সর কাজ করে না, কিন্তু বাইরে থেকে বোঝা যায় না।

র‍্যাম, স্টোরেজ ও প্রসেসর
পুরোনো ফোন হলেও অন্তত এমন কনফিগারেশন হওয়া উচিত যা দৈনন্দিন ব্যবহারে ধীরগতির মনে না হয়। এখনকার অ্যাপ ও সিস্টেম আপডেটের কথা চিন্তা করলে কমপক্ষে ৬জিবি র‍্যাম ও ১২৮জিবি স্টোরেজ হলে ভালো। প্রসেসরও যেন খুব পুরোনো না হয়, নাহলে ফোন হ্যাং ও স্লো হয়ে যাবে।

নেটওয়ার্ক ব্যান্ড সাপোর্ট
আপনি যে দেশে ফোনটি ব্যবহার করবেন সেই দেশের ৪জি বা ৫জি ব্যান্ড সমর্থন করে কি না তা জেনে নিন। বিদেশ থেকে আনা কিছু সেটে স্থানীয় ব্যান্ড সাপোর্ট না থাকায় ভালো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না, ফলে কল ড্রপ বা ইন্টারনেট স্লো হওয়ার ঝামেলা হয়।

অপারেটিং সিস্টেম ও আপডেট
ফোনটি সর্বশেষ বা অন্তত স্থিতিশীল কোনো অপারেটিং সিস্টেমে চলছে কি না দেখে নিন। খুব পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস হলে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে এবং অনেক আধুনিক অ্যাপ চালানো যায় না। তাই সফটওয়্যার আপডেট পাওয়া ফোন হলে তা বেশি নিরাপদ।

ওয়ারেন্টি ও রিটার্ন পলিসি
যদি সম্ভব হয়, এমন দোকান বা প্ল্যাটফর্ম থেকে ফোন কিনুন যেখানে কিছুদিনের রিপ্লেসমেন্ট বা ওয়ারেন্টি সুবিধা থাকে। কারণ পুরোনো ফোনে হঠাৎ করে সমস্যা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। রিটার্ন পলিসি থাকলে অন্তত ঝুঁকিটা কমে।

বডি ও ফিজিক্যাল কন্ডিশন
ফোনের বডি, চার্জিং পোর্ট, ভলিউম ও পাওয়ার বাটন ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। অনেক সময় পড়ে গিয়ে ডিভাইসের ফ্রেম বেঁকে যায় বা ইন্টারনাল ক্ষতি হয় যা বাইরে থেকে সহজে বোঝা যায় না। তাই সময় নিয়ে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত।

ভুয়া অফার কি না দেখে নিন
বছর শেষে ডিসকাউন্টের দোহাই দিয়ে অনেকেই নকল বা সমস্যা-যুক্ত ফোন বিক্রি করতে চায়। খুব কম দামে অস্বাভাবিক ভালো অফার দেখলে আগে বাজারদর যাচাই করুন। সবসময় রশিদ, বক্স, কাগজপত্র ও আইএমইআই মিলিয়ে নিন।

আরও পড়ুন
জরুরি কলে লাইভ ভিডিও শেয়ার করতে পারবেন অ্যান্ড্রয়েডে
চোখের পলকে ফোনের চার্জ শেষ হচ্ছে, সমাধান করুন নিজেই

কেএসকে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।