বিশ্বে ১৭০ কোটি নারীর হাতে নেই সেলফোন

নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর ১৭০ কোটি নারীর হাতে এখনও পৌঁছেনি সেলফোন। এসব দেশে পুরুষদের তুলনায় নারীদের সেলফোন ব্যবহারের হার ১৪ শতাংশ কম, সংখ্যার হিসাবে যা ২০ কোটি। সম্প্রতি জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন ব্রিজিং দ্য জেন্ডার গ্যাপ : মোবাইল অ্যাকসেস অ্যান্ড ইউজেস ইন লো অ্যান্ড মিডল ইনকাম কান্ট্রিজ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
১১টি দেশের নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন। জরিপে দেশগুলোর ৮৯ শতাংশ নারীই জানান, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সেলফোন খুবই প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। এখানে উল্লেখ করার মতো বিষয়, এই ৮৯ শতাংশের মধ্যে যারা সেলফোন ব্যবহার করেন না, তারাও রয়েছেন। অর্থাৎ যারা সেলফোন ব্যবহার করছেন না, তারাও এর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করছেন। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের বাধার কারণে তারা খাতটির সেবা গ্রহণে এগিয়ে আসতে পারছেন না।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেলফোন ব্যবহারে নারীদের এগিয়ে আনতে পারলে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। দেশগুলোয় পিছিয়ে থাকা অন্তত ২০ কোটি নারীকেও যদি সেলফোন সেবার আওতায় আনা যায়, তবে তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাও অনেকাংশে সহজ হবে। আর এতে করে দেশগুলোয় ২০২০ সালের মধ্যে ১৭ হাজার কোটি ডলারের বাজার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সেলফোনের ব্যবহার সময়ের সঙ্গে বাড়ছে। কিন্তু এর ব্যবহার সুষম হারে বাড়ছে না বলেই সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানায় জিএসএম অ্যাসোসিয়েশন।
এমনকি বিশ্বের অনেক দেশে সেলফোন ব্যবহারে লিঙ্গবৈষম্যও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় সেলফোন ব্যবহারে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়ায় পুরুষদের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কম নারী সেলফোন ব্যবহার করেন। বিশ্বব্যাপী মোবাইল ডিভাইস আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি সহজলভ্য। আর দামের ক্ষেত্রেও ডিভাইসগুলো এখন অনেক সাশ্রয়ী। ফলে প্রয়োজনীয় ডিভাইসটির ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী।
প্রতিবেদনে নারীদের সেলফোন কম ব্যবহারের পেছনে পাঁচটি কারণকে মুখ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সেলফোন ব্যবহারে ব্যয়, নেটওয়ার্কের গুণগত মান ও কভারেজ, সেলফোন ব্যবহারে নারীর নিরাপত্তা, অপারেটরের ওপর আস্থা ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং ব্যবহারে আস্থা।
এ বিষয়গুলো নারীদের সেলফোন ব্যবহার থেকে অনেকাংশে পিছিয়ে রাখছে, যা প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য ও পরোক্ষভাবে অর্থনীতির উন্নয়নে বাধা তৈরি করছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে। পাশাপাশি মোবাইল ডিভাইসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। কিন্তু তার পরও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোয় নারীদের সেলফোন ব্যবহারের হারে খুব বেশি পরিবর্তন আসছে না বলেই প্রতিবেদনে জানানো হয়। সূত্র : যুগান্তর
এসএইচএ/এমএস