ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি ছাত্রদলের

মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাবি ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি ও প্রক্টরের বিরুদ্ধে অযোগ্যতার অভিযোগ তুলে তাদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ঢাবি ছাত্রদল। শনিবার (৩১ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানায় তারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।

ঢাবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যার বিচার, ঢাবি উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ এবং ডাকসু নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিষয়াবলি নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, সাম্য হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য এখনও উদঘাটিত হয়নি। পুলিশ প্রশাসন সংবাদ সম্মেলনে অস্পষ্ট বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ করে রেখেছে। ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনের অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তিকরভাবে তথ্য উপস্থাপনের বিষয়ে সাম্যর পরিবারও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

ছাত্রদল অভিযোগ করে, এখনও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদকের সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের পলাতক সন্ত্রাসীদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

ছাত্রদল সভাপতি বলেন, সাম্য হত্যার মতো একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সাম্য নিহত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের অভিভাবক হিসেবে উপাচার্যের কাছে নিজেদের আবেগ প্রকাশ করলে তিনি যেভাবে অপেশাদার আচরণ করেছেন তা সমালোচিত হয়েছে। মূলত এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য ও প্রক্টরের ইমেজ সংকট দেখা দেয়। এর জবাবে দায় এড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে অতীতের মতোই প্রশাসনের পক্ষ হয়ে একদল সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী অনলাইনে সাম্য, তার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের জড়িয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টাও করেছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ডাকসু ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংস্কার ও ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো নিরাপদ ও সহনশীল পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

তিনি বলেন, ২৪ এর জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তির পতনের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে নিরাপদ ক্যাম্পাসের আকাঙ্ক্ষা করেছে, সে রকম ক্যাম্পাস বিনির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া ন্যাক্কারজনক নানা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও গা ছাড়া মনোভাব ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাবিধানে তাদের অযোগ্যতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। নিরাপদ ক্যাম্পাস আমাদের অধিকার। দীর্ঘদিন সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার পর হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস বিনির্মাণের যে অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়ে এই প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল, সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে না পারার ব্যর্থতা এই প্রশাসন কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিনিয়র সহ সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সহ সভাপতি আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূর আলম ভুঁইয়া ইমনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এফএআর/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।