জোবায়েদের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আদালতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আদালতে বিক্ষোভ হয়েছে।
জবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এসময় তারা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘জোবায়েদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তোদের রক্ষা নাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘জোবায়েদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন নৃশংস কাজের সাহস না পায়।’
বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন জবি ছাত্রদলের প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন সরদার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর আহমেদ, জবি ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব, আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবির সংগঠক মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
জোবায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি জবি কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। তিনি গত এক বছর ধরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯) নামের এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন।
আরও পড়ুন
মিন্নির ঘটনার মতোই জোবায়েদ হত্যার ঘটনা: পুলিশ
ত্রিভুজ প্রেমের বলি জোবায়েদ: পুলিশ
জোবায়েদ হত্যায় ওই ছাত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নুরবক্স লেনের রৌশান ভিলা ভবনে বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে খুন হন জোবায়েদ। ভবনের নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিনতলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়েছিল তার মরদেহ।
পুলিশ জানায়, বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদ ও মাহির রহমান (১৯) নামের আরেক যুবকের প্রেমের সম্পর্কের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাহির ও বর্ষার মধ্যে নয় বছর ধরে পরিচয়। তবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয় দেড়-দুই বছর আগে।
হত্যার দিন বিকেলে জোবায়েদ রৌশান ভিলায় গেলে মাহির ও তার বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০) আগে থেকে সিঁড়ির নিচে ওত পেতে থাকেন। সেখানে মাহির জোবায়েদকে বর্ষার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং একপর্যায়ে বাক্বিতণ্ডা হয়। তখন মাহির ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে জোবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করেন। এ হত্যাকাণ্ডের সময় বর্ষা ভবনের তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বংশাল থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরদিন সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ভাংনা এলাকা থেকে মাহির, একই রাতে নিজ বাসা থেকে বর্ষা ও পরে শান্তিনগর চামেলীবাগ থেকে আয়লানকে আটক করা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে বংশাল থানায় মামলা করে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
টিএইচকিউ/একিউএফ/এএসএম