চবিতে মদ তৈরির গোপন কারখানা, আটক ২

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১০:৩৬ এএম, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) একটি ঘরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বাংলা মদ ও বন্য প্রাণী শিকারের অস্ত্রসহ দুজনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক একজনকে রাতেই ছেড়ে দওয়া হয়েছে। 

সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কাননের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনে গ্রীনহাউস এলাকার ব্রিজের উত্তর পাশের ওই ঘরে অভিযান চালিয়ে সুমন চাকমা ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়।

জানা যায়, সুমন চাকমা প্রায় ১৫ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিজ নেওয়া বখতিয়ার ফকিরের জমিতে বসবাস ও চাষাবাদ করে আসছিলেন। একটি ছোট্ট টিনের ঘরে থাকা এই ব্যক্তি গোয়ালঘরের পেছনের লম্বা বারান্দা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে মদ তৈরি করতেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স এলাকার পুকুরপাড়ে বহিরাগতদের ঘনঘন আনাগোনা ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর নিয়মিত উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সন্দেহে ফেলে। গোপনে নজরদারি ও কয়েক দফা রেকি করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে প্রক্টর, নিরাপত্তা সুপারভাইজার নুরুদ্দীন-মহিউদ্দিনসহ ৭-৮ সদস্যের একটি দল বাড়িটি ঘিরে ফেলে।

তিনি আরও বলেন, এসময় সুমন চাকমা ও তার সঙ্গে থাকা নারীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ওই নারী তার স্ত্রী নন। তল্লাশিতে ঘরের পেছনে গড়ে তোলা মদের কারখানা থেকে প্রায় ৩০ লিটার সদ্য প্রস্তুত গরম মদ, ৫ লিটার ডেক্সি, ডেলিভারি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত বোতলসহ মদ তৈরির বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়। মদ বিক্রির হিসাব সংবলিত নোটবুকও জব্দ করা হয়েছে। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত আড়াইটার দিকে আটক নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লিজকৃত জমিতে অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালানোর ঘটনায় লিজ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনুমতিহীনভাবে গাছ কাটার অভিযোগে লিজগ্রহীতা ব্যক্তিকে আর্থিক জরিমানা করা হবে।

অভিযোগ রয়েছে, সুমন চাকমা শুধু মদ ব্যবসাই নয়, দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের জঙ্গল থেকে বন্য শুকর, হরিণ, বন্য মুরগিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার করতেন এবং এর মাংস বিক্রি করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীও নিয়মিত তার কাছ থেকে মদ কিনতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। নিয়মিত ওই এলাকায় যাতায়াতকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে।

অভিযানের সময় বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনস্পেক্টর মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে পুলিশ দলসহায়তা করে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী হত্যা এবং অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।


সোহেল রানা/এফএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।