রাবি শিক্ষক তাহের হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর


প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহেরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মামলার ১১ বছরেও  চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিচারে দীর্ঘসূত্রতায় অসন্তোষ প্রকাশ ও দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুবয়ারি রাতে অধ্যাপক তাহের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকার পশ্চিম ২৩/বি বাসা থেকে নিখোঁজ হন। পরে ৩ ফেব্রুবয়ারি সকালে নিজ বাসার পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ পুলিশ অধ্যাপক তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরকে আটক করে।

তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৭ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মো. মহিউদ্দিনকে আটক করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিক্ষক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী নগরীর মতিহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক আহসানুল কবির জামায়াতপন্থী শিক্ষক মিয়া মহিউদ্দিন ও তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহীসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরে ২০০৭ সালের ৩ জুলাই রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। ২০০৮ সালের ২২ মে আদালত শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীরের ভাই শিবির কর্মী আব্দুস সালাম ও নাজমুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

অভিযোগপত্রের অন্য দুই আসামি তৎকালীন মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করেন আসামিরা। ৫ বছর পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়।

ওই বছরের ২১ এপ্রিল আপিলের রায়ে শিক্ষক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং জাহাঙ্গীরের ভাই শিবির কর্মী আব্দুস সালাম, নাজমুল ইসলামের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তবে অভিযোগপত্রভূক্ত আসামিদের দুই জন খালাস ও অন্য দুই জনের সাজা কমানোয় ড. তাহেরের পরিবারের পক্ষ থেকে আবার উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। কিন্তু ৪ বছর পরেও আপিলের নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে বিচারের রায় কার্যকরও সম্ভব হয়নি।

এদিকে, অধ্যাপক তাহের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে প্রতিবাদ র্যালি করেছে বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিভাগের সামনে থেকে এই প্রতিবাদ র্যালি বের করা হয়। র্যালি শেষে বিভাগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।

স্মরণসভায় বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের বিচারের রায় দ্রুত নিষ্পত্তি ও কার্যকরের দাবি জানায়। এসময় বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক খোন্দকার ইমামুল হক, অধ্যাপক হামিদুর রহমান, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মৃনাল কান্তি রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাশেদ রিন্টু/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।