একুশে ফেব্রুয়ারি থেকেই অধিকার আন্দোলন শুরু হয়: কাজী খলীকুজ্জমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৯ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মূলত একুশে ফেব্রুয়ারি থেকেই আমাদের স্বাধিকার ও অধিকার আন্দোলন শুরু হয়। ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তির সংগ্রাম বলতে আমাদের সবার অর্থনৈতিক মুক্তিকে বুঝিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অর্থ হচ্ছে এদেশে এমন একটি সমাজ হবে যেখানে প্রত্যেকে সমান অধিকার ভোগ করবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আমরা তোমাদের ভুলবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাস্কর্য চত্বরে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে যারা পিছিয়ে আছে তাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর মতে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মানুষের মূল্যবোধ চরম পর্যায়ে। মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া মানুষকেও আমরা পিছিয়ে দিচ্ছি।

ড. খলীকুজ্জমান আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মননে ধারণ করে মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ নাগরিক হতে হবে। তাহলেই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণমুখি রাষ্ট্র তৈরি করতে পারবো।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, শুধু ভাষার মাসেই ভাষা শহীদদের স্মরণ করলে হবে না, তাদের আত্মত্যাগের কারণ অনুধাবন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তার অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ ছিলেন এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাও একই পথে চলছেন, কিন্তু সে পথটা কণ্টকাকীর্ণ। কেননা আমরা এখনো বিভিন্ন ষড়যন্ত্র দেখতে পাই।

জবি উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদেরও সচেতন থাকতে হবে কারণ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্ট নয়। এটা বাঙালি জাতীয়তাবাদের ওপর সৃষ্ট রাষ্ট্র, যেখানে রয়েছে বহুমাত্রিকতা। আর বহুমাত্রিকতা আছে বলেই ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও অনুষ্ঠান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম।

আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করা হয়। এ সময় নৃত্য পরিবেশনা এবং সংগীত বিভাগের আয়োজনে সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পরে সংগীত বিভাগ, জবি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, আবৃত্তি সংসদ ও আদিবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।

জবির সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বুশরা জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. মহসীন রেজা এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অনুষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

আরএএস/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।