বন কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকিতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জিডি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ১১:৩৭ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বনের জমিতে অবৈধ দখল ও স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিলে বন কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের রামু উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শাহাদুজ্জামান বাহাদুরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের এক কর্মকর্তা।

জিডি ও বনকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের বড়ডেবা স্টেশনে বিএনপির কৃষক সমাবেশে হুমকিমূলক এ বক্তব্য দেন শাহাদুজ্জামান বাহাদুর। এসময় তিনি বনের জমিতে অবৈধ দখল ও স্থাপনা নির্মাণে বাধা দিলে কিংবা উচ্ছেদ অভিযান চালালে বন কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। একইসঙ্গে বন এলাকায় বসানো বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো বা কারও বৈদ্যুতিক লাইন কাটার চেষ্টা নিয়েও বনকর্মীদের হুমকি দেন।

শাহাদুজ্জামান কক্সবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সাবেক সভাপতি। খুনিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পদপ্রার্থী। বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজলকে তার নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন।

তার এই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার রাতে রামু থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ও রাজারকুল রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. অভিউজ্জামান। রামুর সব বনকর্মীর পক্ষে তিনি এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়, ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নে বড় ডেবা এলাকায় দলীয় প্রোগ্রাম চলছিল। বন বিট অফিসের পাশের এলাকায় চলা সমাবেশে বক্তব্যকালে জনসমক্ষে শাহাদুজ্জামান বাহাদুর বনভূমিতে কোনো ধরনের অবৈধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে বিএনপি পরিবার ও এলাকাবাসীকে নিয়ে ইউনিয়নের সব বন অফিস গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

এসিএফ এবং রেঞ্জ কর্মকর্তা অভিউজ্জামান বলেন, ওই নেতার হুমকির পর বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন। এজন্য রাজারকুল রেঞ্জের সবার পক্ষে জিডি করেন তিনি।

এ বিষয়ে শাহেদুজ্জামান বাহাদুর বলেন, বনভূমিতে প্রভাবশালীরা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কিংবা পাহাড় কাটলে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ সাধারণ মানুষ একটা ঘর নির্মাণ করলেই ভেঙে দেওয়া হয়। টাকা পেলে একদল ঘর করতে দেয়, পরে আরেক দল এসে উচ্ছেদের হুমকি দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে। মিথ্যা বন মামলায় খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে হয়রানি করা হয়। রাস্তাঘাটের উন্নয়নে বনবিভাগ বাধা দেয় অথচ তাদের অফিসঘরও বনের জায়গায়। এসব বৈষম্যের ক্ষোভ থেকে এমন বক্তব্য চলে এসেছে।

রামু উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোক্তার আহমেদ বলেন, বাহাদুর বর্তমান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে নেই। তবে আগের কমিটিতে সহ-সভাপতি ছিলেন। তার বক্তব্যের বিষয়ে আমার জানা নেই। যদি হুমকি দিয়ে থাকে এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়, এর দায় দল নেবে না।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, শাহাদুজ্জামানের বক্তব্যের ভিডিও দেখেছি। এতে হুমকির ধরন অনুযায়ী এটা ফৌজদারি অপরাধ। তাই অনুমতির জন্য আদালতে পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সায়ীদ আলমগীর/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।