মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার বিএনপি নেতা কারামুক্ত

পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার বিএনপি নেতা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা। এর আগে তাদের হাইকোর্ট খালাস দেন।
মুক্তি পাওয়া চারজন হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোখলেসুর রহমান ওরফে বাবলু, পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কে এম আখতারুজ্জামান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আজিজুর রহমান ওরফে শাহীন এবং বিএনপির স্থানীয় নেতা শামসুল আলম।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ৯ জনসহ ৪৭ আসামির সবাইকে খালাস দেন হাইকোর্ট। এ মামলার চার ফাঁসির আসামি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি ছিলেন। হাইকোর্টের আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
এদিকে তাদের মুক্তি উপলক্ষে সকাল থেকেই ঈশ্বরদী থেকে গাড়িবহর নিয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে এসে জড়ো হন। মুক্তির কিছুক্ষণ আগে কারাগারের সড়ক সংলগ্ন ফটকটি খুলে দেওয়া হয়। তখন নেতাকর্মীরা কারাগারের সীমানার ভেতরে ঢুকে পড়েন। কারাগারের প্রধান ফটক থেকে চারজন বের হলে তাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলা হয়। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরের বছর পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র জমা দেয়। তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল।
কিন্তু আদালত সে অভিযোগপত্র গ্রহণ না করে অধিক তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলার পুনঃতদন্ত হয়।
১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেয়। এরপর ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রায় দেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. রুস্তম আলী। রায়ে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ৪৭ আসামির সবাইকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/এমএস