নির্মাণ কাজ কমে যাওয়ায় কমেছে রড বেচাকেনা

আমিনুল ইসলাম
আমিনুল ইসলাম আমিনুল ইসলাম , জেলা প্রতিনিধি, গাজীপুর গাজীপুর
প্রকাশিত: ১২:৫৪ পিএম, ০৩ মে ২০২৫

গাজীপুরে আবাসন শিল্পসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক কম। ফলে বাজারে কমেছে রড বেচা-কেনা। রডের দামের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা দেখা গেছে। বিভিন্ন কারখানার রড বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাইকারি ও খুচরা বাজারেও দামের ভিন্নতা দেখা গেছে।

রডের পাইকারি, খুচরা ব্যবসায়ী এবং নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর মানুষ বাড়িঘর নির্মাণ কম করছেন। আর বহুতল ভবন নতুন করে গড়ে ওঠা আশংকাজনক হারে কমে গেছে। যেগুলোর নির্মাণ কাজ অব্যাহত ছিল কেবল সেগুলোর কাজ চলছে।

ভোগড়া বাসন সড়ক এলাকার রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী জামাল হোসেন জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর রড বিক্রি কম। আগে প্রতিদিন ৫-৭ টন রড বিক্রি হতো। এ বছর তিন দিনেও ৫ টন রড বিক্রি করতে পারিনি।

চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, দেশে এবার রডের উৎপাদন বেশি হওয়ায় রডের দাম কম। আবার ডলারের দাম বাড়লে রডের দামও বেড়ে যায়। ডলারের দামের সঙ্গে স্ক্রাবের দাম হ্রাসবৃদ্ধি হয়। জাহাজভাঙা স্ক্রাব থেকে যেহেতু রড উৎপাদন হয়, সেহেতু ডলারের সঙ্গে রডের দাম জড়িত। এছাড়া নির্মাণ কাজ কমে যাওয়ায় রডের বাজারে বেচাকেনা কম হচ্ছে।

আরও পড়ুন-

ভোগড়া এলাকার অপর ব্যবসায়ী এমারত হোসেন জানান, এলাকায় এখন আগের মতো বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে না। যার কারণে রড-সিমেন্টের বিক্রিও কম।

গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার রড ব্যবসায়ী শাকিল এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান জানান, বাজারে বিভিন্ন ধরনের রড রয়েছে। দামের ক্ষেত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রডের দাম নির্ধারণ হয়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রডের কারখানাগুলোতে বিভিন্ন গ্রেডের রড বিভিন্ন দামে বিক্রি হয়ে থাকে। আবার একই গ্রেডের রডের দামের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা রয়েছে। রডের বাজার প্রতিদিন ওঠানামা করে। গত বছরের তুলনায় রডের দাম খুব বেশি হ্রাসবৃদ্ধি হয়নি।

গাজীপুরের কয়েকটি রডের দোকান ঘুরে জানা গেছে, বিএসআরএম প্রতিটন ৯০ হাজার টাকা, একেএস ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা, আরআরএম ৮২ হাজার ৫০০ টাকা, এসএসআরএম ৮৫০০০ টাকা দরে বিক্রে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য কোম্পানির রড ৮৪ হাজার ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকারি ও খুচরা দোকানে দামের ক্ষেত্রে কেজিতে এক টাকা থেকে ৫০ পয়সা পর্যন্ত কম বেশি হয়ে থাকে।

ডেভেলপার কোম্পানি আমান্তা প্রপার্টিজের পরিচালক রমজান হোসেন বলেন, এ বছর ফ্ল্যাট বেচা-কেনা অনেক কম। তাই নতুন করে ভবন ও ফ্ল্যাট তৈরি হচ্ছে না। এছাড়া অনেক কোম্পানি সুদিনের আশায় হাত-পা গুটিয়ে বসে আছে।

বিল্ডিং নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদার মো. মোস্তফা বলেন, শুকনো মৌসুমে অন্যান্য বছর যেভাবে কাজ হতো এ বছর তা হচ্ছে না। খুব প্রয়োজন না থাকলে কেউ বাড়ি নির্মাণ করছেন না। এজন্য রডসহ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। কাজ না থাকায় অনেক নির্মাণ শ্রমিক অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।

নির্মাণ শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, আগে এ মৌসুমে কাজ করে শেষ করতে পারতাম না। এখন সপ্তাহে দুই-তিন দিন কাজ করি। কাজ না থাকলে টাকাও নেই। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। অনেকেই অটোরিকশা চালানোসহ ভিন্ন পেশা বেছে নিচ্ছে।

এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।