কুতুবদিয়া-মগনামা জেটিঘাটে ফাটল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ০৩ জুন ২০১৬

ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে কুতুবদিয়া-মগনামা জেটিঘাটে ফাটল দেখা দিয়েছে। রোয়ানুর প্রভাবে সমুদ্রে জোয়ারের পানি আকস্মিক বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতের আঘাতে ফাটলের সৃষ্টি হয়।

ফাটলের ফলে উপকূল থেকে জেটিঘাট এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কুতুবদিয়া যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এ জেটি স্থলভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অর্ধ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জেটিতে যানবাহন উঠানামা বন্ধ রয়েছে। ফলে মালামাল বহন দূরের কথা সাধারণ যাত্রী পারাপারে প্রচণ্ডভাবে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা।

স্থানীয়দের মতে, প্রতিদিন নানা প্রান্ত থেকে আসা অসংখ্য যাত্রী মগনামা জেটি দিয়ে কুতুবদিয়া পারাপার হন। এ জেটির টার্মিনাল পয়েন্টে সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়তো। তাই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ কুতুবদিয়াকে খুব কাছ থেকে অবলোকন করা এবং নদী পয়েন্টে খোলা বাতাসে মন প্রফুল্ল­ করতে বিকেলে এখানে আসতো নানা বয়সের কর্ম ও শ্রমজীবীরা। আসতেন প্রকৃতিপ্রেমীরাও। কিন্তু জেটিঘাটে ফাটল দেখা দেয়ায় যাত্রীসহ ভ্রমণ পিপাসুরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

বাংলাদেশ ওয়াটার ডেভলেপমেন্ট অথরিটি কর্তৃপক্ষ যাত্রী পারাপারের জন্য উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কুতুবদিয়া চ্যানেলে জেটিঘাটটি স্থাপন করে। বিগত এরশাদ সরকারের সময় ক্ষুদ্র পরিসরে মগনামা ঘাটে জেটি স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৪ সালে নদীর চর জেগে উঠা অংশে জেটিঘাট অধিক সম্প্রসারণে দৈর্ঘ্য করা করা হয় প্রায় আধা কিলোমিটার।

এ সময় মূল ভূখণ্ড থেকে দীর্ঘ জেটি স্থাপনের পাশাপাশি নদী সীমানায় স্থাপন করা হয় টার্মিনাল। রোয়ানুর সময় সমুদ্রের ঢেউয়ের প্রচণ্ড আঘাতে জেটিঘাটের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত ব্লক ও সিমেন্টের ফলক সাগরে বিলীন হয়ে যায়। মাটি সরে গিয়ে মূল জেটিঘাট থেকে আলাদা হয়ে যায় স্থলভাগ।

জেটিঘাটে আসা যাত্রী কফিল উদ্দিন বাহাদুর, নিজাম উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, ছফওয়ানুল করিম, মুমু ও রেবেকা জানান, যেভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে মনে হয় জেটিঘাট আর বেশি দিন স্থায়ী হবে না। বিধ্বস্ত অংশ দ্রুত সংস্কার করতে না পারলে সাগরে এটি বিলীন হবে। আগে গাড়ি করে একদম টার্মিনাল এলাকায় পর্যন্ত যাওয়া গেলেও এখন পায়ে হেটে উঠতেও ঝুঁকি মনে হচ্ছে।

টোল আদায়কারী নুরুল আবছার জানায়, রোয়ানু উপকূলের বেড়িবাঁধ খেয়ে শুধু ক্ষান্ত হয়নি আমার আয়ের উৎস জেটি ঘাটটি খেয়ে গেছে। আমরা মাটি ও বালির বস্তা দিয়ে আপাতত জেটিঘাট রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছি।   

পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু জানান, ফাটলের কারণে জেটিঘাট বিপদজনক হওয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শুধু ভোগান্তি নয় দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রতিনিয়ত আতঙ্কিত রাখছে। উপকূলের বিনোদন হিসেবে বিকেলে মুক্ত হাওয়া খেতে শত শত মানুষ জেটিঘাটে আসত। ফাটলের পর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেকটা কমে গেছে।  

সায়ীদ আলমগীর/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।