মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পাঙাশ
ময়মনসিংহে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম বাড়লেও কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। কোনো কোনো মাছের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে। অন্তত ১০ টাকা কমেছে সবজির দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পাঙাশ ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য মাছের দামও কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে তেলাপিয়া ১৭০-২৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ১৮০-২৬০ টাকা, সিলভার কার্প ২১০-২৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২২০-২৭০ টাকা, মৃগেল ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ২৬০-৩১০ টাকা, কাতলা ৩০০-৩৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৩১০-৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কালবাউশ ২৯০-৩৫০ টাকা, রুই ২৮০-৩৮০ টাকা, ট্যাংরা ৪৮০-৮০০ টাকা, পাবদা ৩২০-৪৪০ টাকা, শোল ৫৪০-৮২০ টাকা, ট্যাংরা ৪৮০-৮০০ টাকা, টাকি ৪০০-৫৫০ টাকা, শিং ২৮০-৫৭০ টাকা ও কৈ ২৩০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

তবে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে সবচেয়ে বেশি কমেছে কাঁচামরিচের দাম। গত সপ্তাহ কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গত সপ্তাহে ঝিঙা ও গাজর ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গোল বেগুন ৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা, ধুন্দল ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, মিষ্টি লাউ ২০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা, লতা ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে লেবু ১০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা, কক মুরগি ৩০০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালি, হাঁসের ডিম ৬৫ টাকা হালি, খাসির মাংস ১০০০ টাকা ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
শহরের মেছুয়া বাজারে মাছ কিনতে আসা জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় প্রচুর পাঙাশ উৎপাদন হয়। একসময় পাঙাশ পছন্দ করতাম না। তাই কেনা হয়নি। তবে কয়েক বছর সব ধরনের মাছের দাম বাড়ছে। পাঙাশের দাম তুলনামূলক কম ছিল। পরিবারের অন্য সদস্যরাও এখন পাঙাশ খায়। বাজারে এসে দেখি সেই পাঙাশের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে মাছটি।’
কথা হয় আজিজ মিয়া নামের আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘একেকজন বিক্রেতা বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু দাম কমাতে নারাজ বিক্রেতা। এমতাবস্থায় বাধ্য হয়ে অনেকে বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামে মাছ কিনে বাড়ি ফিরছেন। নিম্ন ও মধ্য আয়ের অনেক ক্রেতা পাঙাশ কিনতে ভিড় জমিয়েছেন।’
বাজারে সবজি কিনতে আসেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সবজির দাম বাড়িয়ে এখন সামান্য কমানো হয়েছে। অথচ বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে দাম নিয়ন্ত্রণ করে বলে মনে হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা আব্দুল কাদির বলেন, ‘গত সপ্তাহের চেয়ে সরবরাহ বেড়েছে। এজন্য দামও কিছুটা কমেছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে। দাম বাড়ানো-কমানোর পেছনে আমাদের কারসাজি নেই। খুচরা বিক্রেতারা সবজি বেশি দামে কিনলে ক্রেতা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়ে।’

দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পাঙাশ বিক্রেতা নয়ন মিয়া বলেন, ‘বাজারে পাঙাশের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তেমনি এ মাছের ক্রেতাও প্রচুর। অন্যান্য মাছের তুলনায় দাম কম হওয়ায় ধীরে ধীরে পাঙাশের ক্রেতা বেড়েছে। বাজারের অন্যান্য পাঙাশ বিক্রেতারা যে দামে বিক্রি করছে আমিও একই দামে বিক্রি করছি। দাম একটু বাড়লেও বিক্রি কমছে না।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘অভিযান চালানো আবারও শুরু করেছি। মাছের বাজারগুলোতে অভিযান চালানো হবে। অহেতুক দাম বাড়িয়ে বিক্রির প্রমাণ মিললে বিক্রেতাদের জরিমানার আওতায় আনা হবে।’
কামরুজ্জামান মিন্টু/আরএইচ/জিকেএস