ময়মনসিংহে বেড়েছে মাছের দাম
ময়মনসিংহে সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ সবজির দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বিপরীতে মাছের দাম বেড়েছে। জাত ও আকার ভেদে মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজার ঘুরে এই তথ্য জানা যায়।
ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঢেঁড়স, কাঁচামরিচ, গাজর, করলা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বরবটি ও বেগুনের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহ ঢেঁড়স ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে এখন কমে হয়েছে ৫০ টাকা। এছাড়া কাঁচামরিচ ১৭০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৬০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭০, চায়না গাজর ১৪০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৩০, করলা ৮০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৭০, ধুন্দল ৫০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪০, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪০ ও বরবটি ৫০ টাকা থেকে কমে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অপরিবর্তিত অবস্থায় শসা ৪০, লতা ৪০, ঝিঙা ৫০, বেগুন ৫০, পটোল ৪০, কাঁকরোল ৫০, টমেটো ১৪০, মিষ্টি কুমড়া ২০ ও কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচা কলা ৩০ টাকা হালি ও লেবু ১০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে বাজারে মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে রুই ২৭০-৩৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন রুইয়ের দাম বেড়ে ২৯০-৩৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে কালবাউশ, শোল, ট্যাংরা, তেলাপিয়া, কাতলা ও পাবদার দামও। কালবাউশ ২৮০-৩৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৩৬০, শোল ৫৪০-৮২০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৬০-৮৪০, ট্যাংরা ৪৮০-৮০০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০০-৮২০, তেলাপিয়া ১৬০-২৪০ টাকা থেকে বেড়ে ১৮০-২৬০, কাতলা ৩০০-৩৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৩২০-৩৮০, শিং ২৮০-৫৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৫৯০ ও পাবদা ৩২০-৪৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৪০-৪৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অপরিবর্তিত অবস্থায় সিলভার কার্প ২১০-২৬০, মৃগেল ২৫০-৩০০, পাঙাশ ১৭০-২১০, গুলশা ৫৫০-১০০০, টাকি ৪০০-৫৫০ ও কৈ ২৩০-৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত অবস্থায় ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা কেজি ও কক মুরগি ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা হালিতে, দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা হালিতে ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি কেনার সময় কথা হয় আব্দুল জব্বার নামের একজন মধ্যবয়সী ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ধাপে ধাপে সব সবজির দাম বাড়িয়ে এখন কিছু সবজির দাম যৎসামান্য কমানো হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। বিক্রেতারা সিন্ডিকেট করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে।
মাছ কেনার সময় কথা হয় জাহিদ মিয়া নামের আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, দিন যত যাচ্ছে, মাছের দাম ততই বাড়ছে। অথচ ময়মনসিংহের উপজেলাগুলোতে বিপুল পরিমাণ মাছ চাষ করা হয়। বাজারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ মনিটরিং না থাকায় মাছের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
সবজি বিক্রেতা নাজিম মিয়া বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। খুচরা বিক্রেতারা কিছুটা কম দামে কিনতে পারছে। এতে বেশিরভাগ সবজির দাম ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাছ বিক্রেতা সানোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ যেমন রয়েছে, ক্রেতার সংখ্যাও তেমনই রয়েছে। মাছের দাম বাড়লেও বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ কিনছেন। সব বিক্রেতারা দাম কমালে, আমিও কমিয়ে বিক্রি করব।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, অনেক বাজারে অভিযান চালিয়ে অসাধু বিক্রেতাদের জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কামরুজ্জামান মিন্টু/এফএ/জিকেএস