নারায়ণগঞ্জে বাউল শিল্পী অনিকার রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী আটক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশিত: ০১:৪৮ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
নিহত বাউল শিল্পী অনিকা

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল শিল্পী আনিকা আক্তার অনিকার (১৯) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অনিকার স্বামী হাবিবুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।

অনিকা আক্তার অনিকার বাবার বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তার পরিবার এ ঘটনাকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে।

অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, পাঁচ বছর আগে হাবিবুর রহমান অনিকাকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর জানা যায়, হাবিবুর রহমান অনিকার আগে আরও চারটি বিয়ে করেছিলেন। সামান্য ঝগড়া হলেই নাকি তিনি আবার বিয়ে করতেন। চার মাস আগে অনিকার একটি কন্যা সন্তান হয়। অনিকা সেই সন্তান কোলে নিয়ে বিভিন্ন বাউল ক্লাবে গান গেয়ে সংসার চালাতেন।

তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি হাবিবুর রহমান মালা নামে আরেকজন বাউল শিল্পীকে বিয়ে করেছেন। এই বিষয়টি অনিকা জানার চেষ্টা করলে হাবিব ক্ষিপ্ত হয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর চলে যান। সেখান থেকে কয়েকদিন আগে তিনি অনিকাকে তালাকের নোটিশ পাঠান।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নোটিশ নিয়ে অনিকা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে নালিশ করলে হাবিবুর আরও ক্ষিপ্ত হন। পরিবারের অভিযোগ, এরপর স্বর্ণা নামে আরেক বাউল শিল্পীকে দিয়ে হাবিবুর অনিকাকে হত্যার চেষ্টা করেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে স্বর্ণা অনিকার বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং অনিকার পরিহিত স্বর্ণের অলংকার খুলে নেয়।

নিহতের পরিবারের দাবি, হাবিবুর পরিকল্পিতভাবে অনিকাকে হত্যা করে তা ধামাচাপা দিতে মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।

তবে আটক স্বামী হাবিবুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি অনিকাকে হত্যা করেননি। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে ফিরে এসে তিনি ভুইগড়ের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন, অনিকার নিথরদেহ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে।

তিনি আরও দাবি করেন, অনিকাকে যে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছিলেন, সেটি ভুয়া এবং অনিকাকে ভয় দেখানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে নিহতের পরিবার দাবি করছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে তার স্বামী হাবিবুর রহমান(২৫)। এজন্য জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছে।

মোবাশ্বির শ্রাবণ/কেএইচকে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।