দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তায় দুর্ভোগে তিন উপজেলার মানুষ

আব্দুল্লাহ আল নোমান আব্দুল্লাহ আল নোমান , জেলা প্রতিনিধি টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের স্বল্পমহেড়া-জামুর্কী সড়কের বেহাল দশা

স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার স্বল্পমহেড়া-জামুর্কী সড়কের মাত্র দুই কিলোমিটার অংশ পাকাকরণ হয়নি। এই বেহাল কাঁচা সড়কের কারণে মির্জাপুর, বাসাইল ও দেলদুয়ার উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতকারীদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মিত এই সড়কটি মহেড়া জমিদার বাড়ির (বর্তমানে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার-পিটিসি) সঙ্গে মির্জাপুর, বাসাইল ও দেলদুয়ার উপজেলার যোগাযোগ রক্ষার একমাত্র পথ। পিটিসি ১৮৯০ এর দশকে প্রতিষ্ঠিত মহেড়া জমিদার বাড়িতে ১৯৭২ সাল থেকে চালু আছে। কিন্তু ব্রিটিশ আমলের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘ ৫৩ বছরেও এই সড়কটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই সড়কটি শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদেরই নয়, মহেড়া জমিদার বাড়ি দেখতে আসা সারাদেশের শত শত দর্শনার্থীর যাতায়াতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সড়কের বেহাল দশার কারণে স্থানীয় ও দর্শনার্থীরা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে পিকনিক স্পটে আসতে বাধ্য হন। তাছাড়া, কড়াইল, ভাতকুড়া, ছাওলিমহেড়া, আদাবাড়ি, জামুর্কী, গনুটিয়া, সাঁটিয়াচড়াসহ প্রায় ১০-১২টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ এটি। এই সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও উচ্চ বিদ্যালয় অবস্থিত।

jagonews24

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিবার সরকার পরিবর্তন হলেও স্থানীয় নেতারা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু কোনো সরকারের আমলেই সড়কটির উন্নয়ন কাজ হয়নি।

জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাদেক আলী মিয়া বলেন, আমি জন্ম থেকে দেখছি এই সড়কটির কোনো উন্নয়ন নেই। আশপাশের গ্রামসহ তিন থানার লোক এ রাস্তায় চলাচল করে। শিশুদের লেখাপড়া, কৃষিকাজ, ফসল আনা-নেওয়া, গ্রাম থেকে শহরে যাতায়াতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। একটু বৃষ্টিতে হাঁটু পরিমাণ কাঁদা মাড়িয়ে চলতে হয় মানুষকে। কাঁচা সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে নানা সমস্যা হয়।

আরও পড়ুন
টাঙ্গাইলে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে লাখো মানুষ
শ্রেণিকক্ষ সংকট, গাছতলায় চলে পাঠদান
সড়ক জোটেনি ব্রিজের

ভ্যান চালক নরু মিয়া জানন, এই রাস্তা দিয়ে সকাল-বিকাল তাদের যেতে হয়। বেশি সমস্যা হয় বৃষ্টির সময়। যখন খালি গাড়ি থাকে তখন আরও কষ্ট হয়। কারণ মানুষের সাহায্য ছাড়া এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিদিন যা আয় করেন তার চেয়ে দ্বিগুণ খরচ করতে হয় গাড়ির পেছনে।

স্কুলে যাতায়াতের দুর্ভোগের কথা জানিয়ে স্থানীয় স্টার অ্যাকাডেমি স্কুলের গাজী ফাহিম ও অহেদ নামে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলেই প্রায় ৭শ’ থেকে ৮শ’ ছাত্র-ছাত্রী। এছাড়া আরও স্কুল-মাদ্রাসা আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় বৃষ্টি ও বর্ষার সময়।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মির্জাপুর উপজেলার স্বল্পমহেড়া-জামুর্কী সড়কের দুই কিলোমিটার কাঁচা অংশ এলজিইডির আইডিভুক্ত করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ডিপিবি (DPB) প্রকল্পের মাধ্যমে খুব দ্রুতই রাস্তাটির পাকাকরণের কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।

আব্দুল্লাহ আল নোমান/কেএইচকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।