জমে উঠেছে বউ বাজারের কেনাকাটা
মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, মাঝে মাঝে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। আবার কখনো রোদের ঝলকানি। এরই মধ্যে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে দারুণভাবে জমে উঠেছে ব্যতিক্রমধর্মী বউ বাজার।
ছুটির দিনে নিজেদের অভাব দূর করতে ও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে দোকান কর্মচারীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত ব্যতিক্রমধর্মী বউ বাজার বসে প্রতি শুক্রবার। চলে আধা বেলা। এই বউ বাজার নারী ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ছুটির দিনে ক্রেতারা বউ বাজারে এসে যেমন স্বল্প মূল্যে তাদের পণ্যের চাহিদা মেটাচ্ছেন তেমনিভাবে ছুটির দিনে দোকান কর্মচারীরা ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লাভবান হচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের বাসুনিয়াপট্টিতে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই বউ বাজার চলে। সকাল থেকেই নারী ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। উন্নতমানের দোকানে যেসব কাপড় পাওয়া যায় ঠিক সেইসব কাপড় বউ বাজার থেকে কম মূল্যে পাওয়া যায়।
কিভাবে কম মূল্যে কাপড় বিক্রি করছেন জিজ্ঞাসা করলে বউ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে যারা ব্যবসা করেন তাদের দিতে হয় না দোকান ভাড়া, নেই কর্মচারীদের বেতন এবং নেই কোনো ইলেক্ট্রনিক্স বিল বা খাজনা। তাই বাইরে থেকে কাপড় যে দামে কেনা হয় তার উপর কিছুটা লাভ রেখেই সেসব কাপড় বিক্রি করা হয়। 
কিন্তু এই কাপড়গুলোই যখন উন্নতমানের দোকানে বিক্রি হয় তখন সেগুলোর উপর দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি যোগ করে এসব কাপড়ের মূল্য বেশি হয়ে যায়।
একই কাপড় কম মূল্যে পাওয়া যায় স্বীকার করে শহরের উপশহর এলাকার আঞ্জমান আরা, ঘাসিপাড়ার কাজলি বেগম, কলেজছাত্রী আয়শা আকতার বানু জানান, কম মূল্যে কাপড় পাওয়া যায় বলেই আমরা শুক্রবার করে এসব দোকানে কাপড় কিনতে আসি।
ঈদের আগে ক্রেতাদের ভীড় বেড়েছে। এখানে আগে সাধারণত গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা কাপড় কিনতে আসত। কিন্তু বর্তমানে ধনী শ্রেণির নারীরাও আসছে।
কাপড় ব্যবসায়ী বিমল আগরওয়ালা জানান, মোট ২ শতাধিক কাপড়ের দোকান কর্মচারী এসব দোকানের মালিক। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে কাপড় কিনে নিয়ে এসে এসব দোকানে বিক্রি করে। অন্যান্য দিনে তারা কাপড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে।
কিন্তু ছুটির দিনে বাড়তি আয়ের জন্য তারা এই ব্যবসা পরিচালনা করে। আর এবার ঈদকে সামনে রেখে বউ বাজারের দোকানিরা অনেক রকমের কাপড় সংগ্রহ করেছে। সব ধরনের কাপড় আসায় ও দামে কম পাওয়ায় বউ বাজারটি দিনাজপুরের নারী ক্রেতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বউ বাজারের নিরাপত্তায় নেই কোনো পুলিশ বা আনসার ভিডিপির সদস্যরা। বাসুনিয়াপট্রির যে রাস্তায় বউ বাজার বসছে সে রাস্তা দিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পারেন।
এসএস/পিআর
