কুষ্টিয়ায় সাপ আতঙ্ক: ১০ মাসে ৮ জনের মৃত্যু, অ্যান্টিভেনম সংকট

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৮:০৫ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২৫

চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে (জানুয়ারি-অক্টোবর) কুষ্টিয়া জেলায় সাপের কামড়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে জেলায় মোট ৩৯৩ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩ জনকে বিষধর সাপ দংশন করেছে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন অফিস।

তবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনমের মজুত না থাকায় সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে চিকিৎসকদের।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ১৫৫, দৌলতপুরে ৭৫, কুমারখালীতে ১, মিরপুরে ৫২, ভেড়ামারায় ৯৩, খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৭ জন সাপে কাটা রোগী ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৭জন জেনারেল হাসপাতাল ও একজন দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২ জন। বাকিদের হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে গত ২৮ অক্টোবর সিভিল সার্জন অফিসের পাওয়া তথ্যনুযায়ী, দৌলতপুরে ৬৩, মিরপুরে ১০, ভেড়ামারায় ৩০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম মজুত থাকলেও জেনারেল হাসপাতাল, কুমারখালী ও খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো অ্যান্টিভেনম মজুত নেই বলে জানানো হয়। যদিও নিজস্ব তহবিল থেকে ৫০ ভায়ালের ওপর অ্যান্টিভেনম কেনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম জানান, এ অঞ্চলে বিষধর সাপের মধ্যে মূলত গোখরা, কালাচ এবং রাসেল ভাইপার অন্যতম। যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের বেশিরভাগকেই হাসপাতালে আনার ক্ষেত্রে দেরি হয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা পেলে অনেক মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব ছিল।

তিনি আরও বলেন, মূলত গ্রামাঞ্চলে সচেতনতার অভাব, কুসংস্কারের কারণে ঝাড়ফুঁক করার প্রবণতা সাপের কামড়ে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দিচ্ছে।

অ্যান্টিভেনম সংকটের বিষয়ে আরএমও বলেন, হাসপাতালের নিজস্ব তহবিল থেকে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫০ ভায়ালের ওপর অ্যান্টিভেনম কেনা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, যে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের চুক্তি ছিল, সেই প্রতিষ্ঠান কাঁচামালের অভাবে উৎপাদন ও সরবরাহ করতে পারছেন না। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা দেখছেন। কিন্তু এখন আর চাহিদাপত্র দেওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, বিকল্প হিসেবে হসপাতালগুলোতে বাজেট দিয়ে দেওয়া হবে। তারা তাদের প্রয়োজন অনুসারে অ্যান্টিভেনম কিনে ব্যবহার করবেন। এছাড়া প্রান্তিক এলাকাগুলােতে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আল-মামুন সাগর/কেএইচকে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।