টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ভবনে ফাটল
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে অবস্থিত শালবন টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবনে দুই দফা ভূমিকম্পে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল ধরা ভবনে আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। ভূমিকম্পে প্রচণ্ড ফাটলে চরম আতঙ্কে টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরাও।
বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কায় নিয়মিত ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি দিন দিন কমে আসছে বলে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা জানায়। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টটেনডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, খাগড়াছড়ি গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিলেও গণপূর্ত বিভাগ থেকে দেখতেও আসেননি কোন কর্মকর্তা।
তবে গণপূর্ত বিভাগের খাগড়াছড়ি নির্বাহী প্রকৌশলী মির্জা সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে জানান, এ বিষয়ে ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবদেন করতে পারেন। যদি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের দায়িত্ব দেন তাহলে আমরা অবশ্যই এটা সংস্কার করে দেব।
নবম শ্রেনীতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. শাহীন ও জান্নাতুল ফেরদৌস সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গত দুই দফা ভূমিকম্পে ভবনে ফাটল ধরার পর থেকে ক্লাশে আসলে অনেক ভয় হয়। মনে হয় কখন যেন ভবনটি মাথায় ভেঙে পড়ে। শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, বর্তমানে ছাত্রছাত্রীরা যেমন আতঙ্কে আছে তেমনি আতঙ্কে আছেন শিক্ষকরাও।
জানা যায়, ২০০৫ সালে দুই একর ভূমির উপর প্রায় এক কোটি টাকা ব্যায়ে পাঠবস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে খাগড়াছড়ি শালবন এলাকায় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
এখানে নবম দশম শ্রেণিতে ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং, ডাইং প্রিন্টিং অ্যান্ড ফিনিশিং এবং উইভিং (তাঁত বুনন) তিনটি ট্রেডে ছাত্র/ছাত্রীদের কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা হয়। কিন্তু পাঠবস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় প্রয়োজনীয় সংস্কার, নিরাপত্তা বেষ্টনি দূরদুরান্ত থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা ও ফোর লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় মূল্যবান কারিগরি যন্ত্রপাতিগুলো বছরের পর বছর অলস পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টটেনডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন জানান ছয় মাস ধরে শিক্ষকরা বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। শিক্ষকদের জন্য নেই কোন আবাসন সুবিধা, পানির সংযোগ আর স্যানিটেশন ব্যবস্থার চরম বেহাল দশা। এক কথায় সকল প্রকার আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে ২০০৫ সালে পাচঁ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ভবনটি দুই তলা নির্মাণ করা হয়। পাচঁ তলা নির্মিত ফাউন্ডেশনের দুই তলা করা হলেও মাত্র দশ বছরের মধ্যে ভূমিকম্পে ভবনের নীচের অংশে ব্যাপক ফাটল ধরায় সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত বিভাগ ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল গেইটটি মজবুত এবং ঘেরা না থাকায় এলাকার কিছু বখাটে ছেলেরা ভেতরে প্রবেশ করে ছাত্রীদের নানা ধরনের ইভটিজিং করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমজেড/আরআই