ঈশ্বরদীতে ইসলামী ব্যাংকে অভিনব কায়দায় প্রতারণা


প্রকাশিত: ০৯:৫০ এএম, ০৬ মে ২০১৫

ঈশ্বরদীর সর্বাধিক ব্যস্ততম এবং আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকে অভিনব কায়দায় প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। মহেশ্বর গ্রামের জিয়াউর রহমানের স্ত্রী লিপি খাতুনের কাছ থেকে প্রতারকচক্র আশি হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি প্রতারণার শিকার লিপি খাতুনের সাথে ব্যাংক ম্যানেজার দুর্ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লিপি খাতুন জানান, মঙ্গলবার সাড়ে ১২টার দিকে তিনি দুবাই হতে স্বামীর পাঠানো এবং ওমান হতে ছোট বোনের জামাইয়ের পাঠানো টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে যান। তিনি ব্যাংক থেকে নব্বই হাজার টাকা তোলেন। ক্যাশিয়ার তাকে পাঁচশ টাকা নোটের ৮৯,৫০০টাকা এবং পাঁচ টাকার নোটের একটি বান্ডিল দেন। এসময় পাশে দাঁড়ানো এক মুরুব্বি বলেন, দিনসময় ভালো না, মা তুমি এতো খুচরা টাকা নিয়ে যাবে। তার চেয়ে আমি তো ব্যাংকে বড় টাকা জমা দিব, তোমার নোটগুলো আমি বড় করে দেই। লিপি প্রথমে রাজী না হলেও পরে রাজী হন।

এসময় প্রতারক এক হাজার টাকার নোটের বান্ডিল দেখিয়ে তার ভ্যানিটি ব্যাগে টাকাগুলো ঢুকিয়ে দেয়। লিপি ব্যাংক হতে বের হয়ে গাড়িতে উঠার সময় হঠাৎ তার সন্দেহ হয় টাকাগুলো জাল কিনা। এসময় তিনি ব্যাগ খুলে দেখেন, বান্ডিলে ৫টি এক হাজার টাকার নোট উপরে-নিচে সাজানো ও মাঝে ১০০টি একশ টাকার নোট দিয়ে সর্বমোট দশ হাজার টাকা রয়েছে। অর্থাৎ আশি হাজার টাকা প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে।

লিপি জানান, তাৎক্ষনিক তিনি ব্যাংকে গেলে দারোয়ান তাকে নামাযের কথা বলে ব্যাংকে ঢুকতে দেয়নি। এসময় জোর করে ঢুকে পড়লে ম্যানেজার লিপির সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তাকে ব্যাংক থেকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দেন বলে লিপি অভিযোগ করেন।

লিপি আরো জানান, এসময় সিসি ক্যামেরায় ছবি দেখতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ শুধু ব্যাংকের লোকজনের দেখার জন্য। গ্রাহকদের দেখানো যাবে না। পরে বিকেলে থানার লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে ব্যাংক সিসি ক্যামরার ফুটেজ থেকে প্রতারকদের ছবি বের করে দেন।

সর্বাধিক লেনদেনকারী ইসলামী ব্যাংকে এ ধরনের প্রতরণার ঘটনা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া প্রতারণার শিকার ব্যাংকের গ্রাহক লিপি খাতুনকে সহানুভূতির পরিবর্তে ব্যাংক ম্যানেজারের দুর্ব্যহারের ঘটনা জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ব্যাংকের ফুটেজ থেকে পাওয়া ছবিগুলোও তেমন পরিস্কার নয়। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইসলামী ব্যাংকের মতো বৃহৎ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানে কম দামী ও দুর্বল সিসি ক্যামেরার ব্যবহার সত্যিই আশ্চর্যজনক।

এ ব্যাপারে ব্যাংকের ম্যানেজার আব্দুল মতিনের সাথে কথা বলা হলে তিনি প্রতারণার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত দুই দাঁড়িওলাকে শুধু ওই মহিলার পাশপাশি দেখা গেছে এবং প্রতারকরা ব্যাংকের কোন কাউন্টারেই লেনদেন করেননি বলে তিনি জানিয়েছেন। ব্যাংকের পক্ষ হতে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ বা থানায়ও কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে লিপি থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।

আলাউদ্দিন আহমেদ/এসএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।