ডিবির এসআইসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা
শেরপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ডিবি অফিসে কর্মরত এক এসআইসহ তার পরিবারের ছয়জনের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
নির্যাতিত ওই গৃহবধূর মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শ্রীবরদী থানায় মামলাটি করেছেন। মামলার প্রধান অভিযুক্ত ডিবির এসআই শাহিনুল ইসলাম (৩০) শ্রীবরদী উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকার মৃত হাজী ময়দান আলীর ছেলে। এছাড়া শাহীনের মা ও এক ভগ্নিপতিসহ আরও ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শ্রীবরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস. আলম ছয়জনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সোমবার রাতে মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। এখন নিবিড়ভাবে বিষয়টি দেখতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে শেরপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা কলেজছাত্রীর বুকের ও গলার আরও দুইটি এক্সরেসহ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ডান চোখ, কোমরের দুই পাশ, গলায়, পিঠে, বুকে, পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত নিয়ে গত তিনদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সার্জন ডা. মুক্তি মাহমুদ বলেন, শরীরে বেশ কিছু স্থানে আঘাতের কারণে তার এ অবস্থা হয়েছে। তবে তার অবস্থার উন্নতি হতে কিছুটা সময় লাগলেও সে আশঙ্কামুক্ত।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহিনুল ইসলাম সুজনের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, শেরপুর শহরের দমদমা মহল্লার ব্যবসায়ীর মেয়ে সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ওই নির্যাতিতা গৃহবধূ। শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের বাড়িতে গত ২২ মে রাতে ২০ লাখ টাকার যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায় স্বামী এসআই শাহিন ও তার পরিবারের লোকজন।
এরপর চিকিৎসার অজুহাতে বাড়ি থেকে শেরপুরে নিয়ে আসার কথা বলে কৌশলে তাকে ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ভাড়াটে বাসায় বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখে এবং পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
হাকিম বাবুল/এএম/পিআর