শেরপুরে কলেজছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তার বিচার দাবি


প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ১২ জুন ২০১৭

শেরপুরে কলেজছাত্রী আশরাফুন্নাহার লোপার ওপর নির্যাতনকারী স্বামী ডিএমপি পুলিশের এসআই শাহিনুল ইসলাম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন শেরপুর জেলা শাখা আয়োজিত ওই মানববন্ধনে নাগরিক সংগঠন জন উদ্যোগ, হিউম্যান রাইটসসহ উদীচীর কর্মকর্তা-সদস্য, আইনজীবী, সাংবাদিক এমএ পাবলিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে জেলা শাখা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, ব্যবসায়ী পরিবারের একমাত্র কন্যা লোপাকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। আর বর্তমান সময়ে ওই ধরনের নির্যাতন কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না। নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে টানা ৯ দিন যাবত লোপা হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছে। লোপা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপনীত হলেও তার পাষণ্ড স্বামী এসআই শাহিন এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। পুলিশ শাহিন ও তার সহযোগীদের গ্রেফতারের বিষয়ে একেবারেই নীরব রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একটি সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশে এটা চলতে পারে না, চলতে দেয়া যায় না। কাজেই দ্রুত তাদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা না হলে শেরপুরের সচেতন মহল দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

নির্যাতিতা লোপার নানা ও এমএ পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, কোনো কোনো সময় লোপাকে নির্যাতনের বিষয়টি মোবাইলে কল দিয়ে তার বাবা-মাকে জানানো হতো।

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শক্তিপদ পাল, জেলা উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক তপন সারওয়ার, জন উদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, কবি সংঘ সভাপতি তালাত মাহমুদ, হিউম্যান রাইটস এর সভাপতি এসএম শহীদুল ইসলাম, শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া শিবু, সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. আবদুল আলীম তালুকদার প্রমুখ।

এদিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পাঁচদিন পরও নির্যাতিতা লোপার অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। ডান চোখ ও কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে সেখানেও এক্সরেসহ নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরও লোপার কাশির সঙ্গে রক্ত বের হওয়া বন্ধ না হওয়ায় সোমবার সকালে তাকে মেডিসিন বিভাগ থেকে সার্জারি বিভাগে রেফার করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, শেরপুর শহরের দমদমা মহল্লার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে আশরাফুন্নাহার লোপাকে পার্শ্ববর্তী শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের বাড়িতে গত ২২ মে রাতে ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায় স্বামী এসআই শাহিন ও তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় এসআই শাহীনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লোপার মা সেলিনা আক্তার লাকি বাদী হয়ে গত ৫ জুন শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এসআই শাহীন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত রয়েছেন।

হাকিম বাবুল/আরএআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।