কুমিল্লা ইপিজেডে বর্জ্য শোধনাগার চালু


প্রকাশিত: ০৯:০৬ এএম, ১৭ জুন ২০১৫

অনেকটা দেরিতে হলেও কুমিল্লা ইপিজেডে কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগারের কার্যক্রম চালুর ফলে ইপিজেডের আশপাশের এলাকার কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের জমির ফসল, প্রাকৃতিক জীব, মাছ, জলজ প্রাণি ও পরিবেশ ক্ষতির হাত হতে রক্ষা পাচ্ছে।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৫ মে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর থেকে বর্তমানে পুরোদমে এ বর্জ্য শোধনাগারের কার্যক্রম চলছে।  ইপিজেডের আশপাশের এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল এ বর্জ্য শোধনাগার চালুর জন্য।

কুমিল্লা ইপিজেড সূত্রে জানা যায়, ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী উন্নত যোগাযোগসমৃদ্ধ কুমিল্লা মহানগরীর দক্ষিণাংশে ১৯৯৯ সালের এপ্রিলে ২৬৭ দশমিক ৪৬ একর জায়গা নিয়ে কুমিল্লা ইপিজেড এর উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়।  ২০০০ সালের ১৫ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইপিজেডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনসহ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।  এ ইপিজেডে ২৩৯টি শিল্প প্লট রয়েছে।  নেদারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন, তাইওয়ান, ফ্রান্স, হংকং, মরিশাস, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরা কুমিল্লা ইপিজেডে বিনিয়োগ করেছেন।  

এখানে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উৎপাদন চলছে।  এরমধ্যে রয়েছে ১৯টি বিদেশি, ৮টি যৌথ ও ১০টি দেশিয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।  এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ২১ হাজার ২৫৭ জন বাংলাদেশি ও ২১৮ জন বিদেশি কর্মরত আছেন।  তবে এ ইপিজেডে প্রথম থেকে তরল বর্জ্য শোধনাগার না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, পুকুর-জলাশয় ও খাল-বিলের মাছ ও জলজ প্রাণিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছিলেন।  এ কারণে ইপিজেড প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনগণ প্রায় সময় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।  

এতে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ ইপিজেডে সিগ্মা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনায় ৩৮.৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়।  তখন থেকে প্রতিদিন রাসায়নিক ও জৈবিক উভয় পদ্ধতিতে এ প্লান্টে ১৫ হাজার ঘণমিটার তরল বর্জ্য পরিশোধন করার কাজ চলে আসছিল।  

বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এর মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিন্তে আলমগীর জাগো নিউজকে জানান, কুমিল্লা ইপিজেডে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি পোষাক, টেক্সটাইল, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, ফুটওয়্যার, মেডিসিন বক্স, প্লাস্টিক পণ্য ও বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় তরল বর্জ্য শোধনাগারটি গত ২৫ মে উদ্বোধনের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কারখানার তরল বর্জ্য পরিশোধনের কাজ সার্বক্ষণিকভাবে চলছে।  এ বর্জ্য শোধনাগারে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে জৈবিক ও রাসায়নিক পদার্থ ধ্বংস করার কারণে শোধিত পানি ফসল, জলজ প্রাণি কিংবা প্রাকৃতিক পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে না।
 
মো. কামাল উদ্দিন/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।