বিক্রেতাদের হতাশা নিয়ে চলছে রাজশাহীর ঈদ বাজার


প্রকাশিত: ১১:১২ এএম, ০৩ জুলাই ২০১৫

১৫ রমজানেও জমে উঠেনি রাজশাহীর ঈদ বাজার। দোকানিরা নানা রঙয়ের নতুন ডিজাইনের বহু পোশাক, কসমেটিকস, জুতা স্যান্ডেল নিয়ে বসে থাকলেও আশানুরূপ ক্রেতা পাচ্ছেন না। এজন্য ব্যবসায়ীরা বৈরী আবহাওয়া ও মাসের শুরুতে মানুষের হাতে টাকা না থাকাকে দায়ী করেছেন।

এ বছর পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাজশাহীর নিউমার্কেট, আরডিএ মার্কেট ও কোর্ট নিউমার্কেট বাজারে আকর্ষনীয় ডিজাইনের শাড়ি, কাপড়, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, শিশুদের পোশাক, জুতা-স্যান্ডেল ও কসমেটিকসের অনেক সমারোহ থাকলেও আশানুরূপ ক্রেতার দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ বিক্রেতাদের। ফলে অনেক ব্যবসায়ী হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন। আর গত কয়েকদিন ধরে আষাঢ়ে বৃষ্টিকে ঈদের বাজারে ক্রেতা সংখ্যা কমানোর আরেকটি কারণ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ঈদ যত সামনে এগিয়ে আসবে ক্রেতা সংখ্যা ততই বাড়বে বলে আশায় বুক বাধঁছেন তারা।

শুক্রবার সকালে নগরীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে সরেজমিনে এ ধরনের চিত্র দেখা গেছে। মহানগরীর আরডিএ মার্কেটের উজ্জ্বল বস্ত্রালয়ের মালিক উজ্জ্বল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, গত বছরের  তুলনায় এ বছর তার দোকানে সব বয়সী নারী-পুরুষের জন্য নতুন ডিজাইনের পোষাকের কালেশন থাকার পরও আশানুরূপ ক্রেতা না পাওয়ায় অনেকটা হতাশ তিনি। ক্রেতারা শুধু পোষাক দেখে দেখে চলে যাচ্ছেন। তবে সামনের দিনগুলোতে ব্যবসা ভালো হবে বলে তিনি আশা করছেন।

এদিকে, নগরীর নিউমার্কেট এলাকার মানিক নামের অপর এক ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে জানান, গত বছর এসময়ে তার দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ে পা রাখার জায়গাও ছিল না। কিন্তু এ বছর ১৫ রোজা পেরিয়ে গেলেও তার দোকানে ক্রেতার সমাগম খুব কম বলে তিনি কিছুটা নিরাশ। তবে চাকরিজীবীদের বেতন বোনাস হয়ে গেলে মার্কেটগুলোতে ক্রেতা সংখ্যা বাড়বে বলে তিনি ধারণা করছেন।

তবে এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য এ বছর পোশাক থেকে শুরু করে সব ধরনের জিনিসের দাম বৃদ্ধিকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ক্রেতারা।

নগরীর কোর্ট নিউমার্কেট এলাকার সুমি খাতুন নামের এক ক্রেতা জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর সব ধরনের পোষাকের দাম বেশি বলে তিনি অভিযোগ করেন। শুধু পোষাকই নয় স্যান্ডেল, কসমেটিক্সসহ সব জিনিসের দাম এবার বেশি।

আরডিএ মার্কেটের কেনাকাটা করতে আসা আরেফিন নামের এক ক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, তিনি গত দুদিন ধরে নগরীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে ঘুরে কিছু কেনাকাটা করেছেন। তবে এ বছর পাঞ্জাবি, জিন্সের প্যান্ট থেকে শুরু করে সব ধরনের পোশাকের দাম অনেক বেশি বলে জানান তিনি।

তবে এ অভিযোগ মানতে নারাজ নিউমার্কেটের জেন্স ফ্যাশনের মালিক মেহেদী হাসান। এসময় তিনি জানান, সব ধরনের ক্রেতার কথা মাথায় রেখে এ বছর নতুন নতুন ডিজাইনের পোষাকের কালেকশন রয়েছে তার শো-রুমে। যেসব পোষাক তার শো-রুমে রয়েছে তা সব ধরনের ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কেনাকাটায় নিরাপত্তা দিতে এখনো আরএমপির পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি বিশেষ কোনো ব্যবস্থা। তাই আরডিএ মার্কেট, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে নারীদের ব্যাগ থেকে মোবাইল, টাকা চুরির একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা পুরুষ ক্রেতাদেরও পকেট কাটা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন নগরীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করতে আসা সব ধরনের ক্রেতারা।

বিষয়গুলো নিয়ে আরএমপির (মুখপাত্র) ও নগর গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম জাগো নিউজকে জানান, ঈদকে সামনে রেখে অপরাধ দমনে আরএমপির বিশেষ ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। গত দুদিন আগে আরডিএ মার্কেট থেকে একজন নারী চোরকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তার কাছে থেকে ৩টি চোরাই মোবাইল সেট ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ১৫ রোজার পর থেকে সব মার্কেটে সাদা পোশাকে সিভিল টিম দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

শাহরিয়ার অনতু/এমজেড/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।