৪০ বছর ধরে ভোট দিচ্ছি, এবার ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী
প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ২৯ মার্চ ২০১৮

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে বেসরকারিভাবে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী মেরাজুল হক মেরাজ বিজয়ী হয়েছেন।

তার নিকটতম হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক মোল্লা শামীম (ধানের শীষ)। নির্বাচনে উত্তাপ থাকলেও ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। তবে ভোটার তালিকা গড়মিলের কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও অধিকাংশ কেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। সকাল সাড়ে ৮টায় কাজিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, সকাল ৯টা থেকে ১০টায় দুলালপুর উচ্চ বিদ্যালয়, বেলা ১১টায় ভিটিচিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুপুর ১টায় মানিকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মানিকদী সানরাইজ মডেল একাডেমিতে গিয়ে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি।

একইসঙ্গে ভোটার তালিকায় গড়মিলের কারণে ভোট দিতে না পারার অভিযোগ করেন অনেক ভোটার। ওই সময় বিক্ষুব্ধ ভোটার ও প্রার্থীদের সমর্থকরা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

দুপুর সাড়ে ১২টায় মানিকদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছিলেন মানিকদী গ্রামের বুরুজ মিয়া। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে প্রতিটি নির্বাচনে ভোট দিয়েছি। সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিয়েছি। কিন্তু এবার ভোট কেন্দ্রে এসে তালিকায় আমার নাম খুঁজে পাচ্ছি না। এ কারণে আমি এবার ভোট দিতে পারিনি।

জানতে চাইলে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান জানান, কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ১৭৬ জন। এর মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪৫০ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। তবে ভোটার তালিকায় গড়মিলের কারণে বেশ কয়েকজন ভোটারকে ফিরে যেতে হয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন অফিসে অবহিত করার পর তারা পুরান ভোটার তালিকা পাঠিয়েছে। তবুও অনেকের নাম না মেলায় তাদের ভোট নেয়া হয়নি।

পাশের মানিকদী সানরাইজ মডেল একাডেমি কেন্দ্রে গিয়ে কথা হয় বৃদ্ধা ইনতিজা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৩ ঘণ্টা হলো ভোট দিতে আইছি। কিন্তু তালিকায় নাম নাই বলে তারা ভোট নিচ্ছে না। আমাদের কি সরকার নাকি অন্য কেউ ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে দিছে কেউ প্রশ্নের জবাব দেয় না। তাই ভোট না দিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।

ভোটার ও প্রার্থীরা জানায়, মানিকদীর পাশাপাশি ইউনিয়নের ২ নং কেন্দ্র লাখপুর শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ৫ ও ৬ নং কেন্দ্র দুলালপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও ৭ নং কেন্দ্র ভিটিচিনাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটার তালিকা গড়মিলের কারণে ভোট দিতে পারেনি ভোটাররা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহ জালাল বলেন, এটা কোনো সমস্যা নয়। মূলত সমস্যাটা প্রার্থীরা সৃষ্টি করেছে। অনেকের নামের সঙ্গে ছবির নাম মিল পাওয়া যায়নি। তাই তাদের ভোট গ্রহণ করা হয়নি। তবুও তালিকা নিয়ে আপত্তি উঠায় পুরাতন তালিকাও সরবরাহ করা হয়েছে। এতেও কেউ কেউ বাদ পড়েছেন।

সঞ্জিত সাহা/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।