করোনায় মৃতদের দাফন-কাফন করতে প্রস্তুত তারা
যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফন-কাফনের জন্য স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠিত হয়েছে।
যেখানে করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে মৃতদের মরদেহ স্বজনরা হাসপাতাল থেকে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন, মৃতের সংস্পর্শে আসছেন না; সেখানে এই টিম শরিয়তসম্মতভাবে জানাজা ও দাফন-কাফন সম্পন্নের দায়িত্ব নিয়েছেন।
মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১৯ যুবক ও এক নারীর সমন্বয়ে এ স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠিত হয়েছে। করোনার কঠিন এই বাস্তবতায় স্বেচ্ছাসেবীদের এ প্রত্যয় সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই স্বেচ্ছাসেবী টিমের সবাই মুসলিম। টিমের নারী সদস্য সায়্যেদাতুন নেছা যিনি ‘নাজু আপা’ নামেই পরিচিত। এলাকায় কোন নারী মারা গেলে গোসলসহ অন্য ধর্মীয় কাজ সম্পন্নে নাজু আপা এগিয়ে আসেন। অন্তঃসত্ত্বার সন্তান প্রসবেও তিনি এগিয়ে আসেন।
এই টিমের অন্যতম সমন্বয়ক নাছিম খান বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। গণমাধ্যমের বদৌলতে জানতে পারি বাবা-মা, ভাই-বোনসহ আপনজন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর সংস্পর্শে আসছেন না। এমনকি মৃতের জানাজাসহ দাফন-কাফনে অংশ নিচ্ছেন না। যা আমাদের ব্যথিত করেছে। মূলত এই তাগিদে অনেকের আগ্রহে এই স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠন করা হয়েছে।
আরেক স্বেচ্ছাসেবী মাওলানা আশরাফ ইয়াসমিন জানান, তাদের আগ্রহের বিষয়টি প্রচার হওয়ায় ঢাকা থেকে একজন ছয়টি পিপিই দিয়েছেন।
তাদের এই আগ্রহের বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই প্রশংসা করেছেন। শুধু উপজেলায় নয়, দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে তাদের ডাক পড়লে, সেখানেই যেতে প্রস্তুত। তবে টিমের সদস্য ১৯ হলেও তাদের মাত্র ছয়টি পিপিই রয়েছে। এজন্য কোনো সহৃদয় ব্যক্তি যদি টিমের সবার সুরক্ষায় পিপিই দেন তাহলে তাদের জন্য ভালো হবে।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী এ ধরনের উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
মিলন রহমান/এএম/পিআর