হাসপাতাল লকডাউন, হোটেলে চলছে চিকিৎসাসেবা
গত ১০ এপ্রিল নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর হাসপাতালটি লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ওই হাসপাতালে কর্মরত একজন সিনিয়র নার্সের শরীরের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে এ রিপোর্ট পাওয়ার পরদিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। এরপর থেকে গত ১৫ দিন ধরে অস্থায়ীভাবে একটি খাবার হোটেলে চলছে চিকিৎসাসেবা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর পুরো হাসপাতাল লকডাউনে। খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হাওর মালেক সিটির একটি খাবার হোটেলে চালু করা হয় বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবা। সেখানে বসেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১৫ দিন ধরে রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন সিনিয়র নার্সের শরীরের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ওই নার্সের সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন চিকিৎসকসহ প্রায় ২০ কর্মচারীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। হাওরাঞ্চলের ওই উপজেলায় আর কোনো চিকিৎসাকেন্দ্র না থাকায় সেখানে চিকিৎসাসেবার সঙ্কট দেখা দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ খালিয়াজুরী ডাকবাংলার সামনের মার্কেটের একটি খাবার হোটেলে হাসপাতালটির বহির্বিভাগের সেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর থেকে ‘রংধনু হোটেল’ নামে ওই ঘরে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া শুরু হয়। হোটেলটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, খালিয়াজুরী উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবার কথা বিবেচনা করে আমরা আপাতত ওই খাবার হোটেলে রোগীদের জন্য চিকিৎসাসেবা চালু করেছি। হাসপাতালে যারা কোয়ারেন্টাইনে আছেন তাদের পুনরায় নমুনা টেস্ট করে লকডাউন খুলে দেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মাসরুর সিয়াম বলেন, হাসপাতালের যে কয়েকজন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নার্সের সংস্পর্শে যাননি, তারাই রুটিন মাফিক সেখানে বসে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
এদিকে বহির্বিভাগের সেবা চালু করা হলেও লকডাউনের কারণে অভ্যন্তরীণ সেবা (ইনডোর) অর্থাৎ রোগী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুর্গম হাওরের লোজজন স্বাস্থ্যসেবা পেতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
কামাল হোসাইন/এএম/এমকেএইচ