করোনাযুদ্ধে ‘ওরা আটজন’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০৪:২৯ এএম, ১১ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সারাদেশে সাধারণ ছুটি চলছে। ছুটিতে পরিবার-পরিজনকে দূরে রেখে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নসহ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার মানুষকে নিরাপদ রাখতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন ‘ওরা আটজন’। স্ত্রী-সন্তানকে দূরে রেখে এই লড়াইয়ে তারা হয়ে উঠেছেন করোনাযোদ্ধা।

করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, সরকারি ত্রাণ বিতরণ ও বিদেশফেরত লোকজনের তথ্য সংগ্রহপূর্বক হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নে উপজেলা প্রশাসনের ৮ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়ে গত ২২ মার্চ অফিস আদেশ জারি করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ।

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের ওই কর্মকর্তারা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে নিরাপদ রাখতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলার প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, সরকারি ত্রাণ বিতরণ, মানবিক সহায়তার তালিকা যাচাই, টিসিবির পণ্য বিক্রি তদারকি ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করাসহ সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। এসব কাজ করতে গিয়ে তারা নিজেরাই করোনাভাইরাসে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন নিজেকে। তবুও পিছু হটেননি।

jagonews24

ইতোমধ্যে মাঠ প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ক্যাডার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে তবলছড়ি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা সমবায় অফিসার মো. আমান উল্যাহ খান বলেন, দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। তবুও দায়িত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করছি। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার মাটিরাঙ্গা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমাদেরও পরিবার আছে, আছে স্ত্রী-সন্তান। তারপরও তাদের মায়া ছেড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা মাঠে আছি। করোনা ভয়কে পেছনে ফেলেই শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো। এ যুদ্ধে আমাদেরকে জিততে হবে।

jagonews24

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ বরেন, নিজের জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও গত দুই মাস ধরে এসব কর্মকর্তারা মাটিরাঙ্গার মানুষকে নিরাপদ রাখতে কাজ করছেন। তারা কখনো সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করছেন, তারাই আবার রাতের আঁধারে মধ্যবিত্তদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। সরকারি ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করতে তারা দুর্গম গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে চলছেন। আমাদের সব প্রচেষ্টা তখনই সার্থক হবে যখন মাটিরাঙ্গার মানুষ নিরাপদ থাকবে। করোনামুক্ত থাকবে আমাদের মাটিরাঙ্গা। তাদের হাত ধরেই একদিন আঁধার কেটে যাবে আর উদিত হবে করোনামুক্ত নতুন সুর্য।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএসএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।