বরিশালে ঈদ জামাতে করোনা থেকে মুক্তিতে বিশেষ প্রার্থনা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সরকারি নির্দেশনা মেনে গত বছরের মতো এবারো বরিশালের মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল নগরী এবং জেলার মসজিদগুলোতে একাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। ঈদগাহ বা খোলা মাঠের পরিবর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নগরীর কালীবাড়ি রোডের বাসভবনে সীমিত পরিসরে শুক্রবার (১৪ মে) সকাল ১০টায় ঈদের জামাতের আয়োজন করা হয়। সিটি মেয়র ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীরসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা এবং করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরবাসীকে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানান। প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ জানান।
নগরীর কালেক্টরেট জামে মসজিদে সকাল ১০টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল ইসলাম বাদল ও জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারসহ বিভাগীয় এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জামাতে নামাজ আদায় করেন। খুতবা শেষে বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসক মুসল্লিদের উদ্দেশে সরকারের বাণী প্রচার করেন এবং ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
জেলা প্রশাসক সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপন করার আহ্বান জানান। এরপর মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করা হয়। এছাড়া করোনা মহামারি থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া হয়।
নামাজ আদায় শেষে করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি থেকে সবাই বিরত থাকেন। তবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে তারা এক অপরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চরমোনাই পীরের দরবারের খোল মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। বিকল্প হিসেবে চরমোনাই মাদরাসা লাগোয়া পাঁচতলা মসজিদে সামাজিক দূরত্ব মেনে সকাল ৯টায় ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়। পীর চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম জামাতে ইমামতি করেন।
জাতীয় ইমাম সমিতি বরিশাল মহানগর শাখার সভাপতি আলহাজ্ মাওলানা কাজী আবদুল মান্নান বলেন, সরকারি নির্দেশনা মেনে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে আদায় করা হয়েছে। বরিশাল নগরীতে প্রায় ৫০০ মসজিদ আছে। যার প্রতিটিতেই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিকে জামে কশাই মসজিদে ঈদ জামাতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা অংশ নেন। মসজিদের দ্বিতীয় তলায় দেয়াল দিয়ে আলাদা নির্ধারিত স্থানে নারীরা নামাজ আদায় করছেন। সকাল ৯টা ও ১০টায় দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে শতাধিক নারী নামাজ আদায় করেন।
জামে কশাই মসজিদের খতিব মাওলানা কাজী আব্দুল মান্নান জানান, মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ঈদ জামাতে নারীরা অংশ নিচ্ছেন। এবারো এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে করোনার এবার তাদের উপস্থিতি ছিল অন্য সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। আজ ঈদ জামাতে শতাধিক নারী অংশ নেন।
সাইফ আমীন/এসআর/এমএস