স্বামীর ক্যান্সার ছেলের হার্টে ছিদ্র, সবার সহযোগিতা চান রোজিনা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৪:৫৫ পিএম, ০৬ জুলাই ২০২১

আহনাফ রিয়ানের বয়স মাত্র চার বছর। জন্মের পর মাত্র দেড় বছর বয়সে তার হার্টের ছিদ্র ধরা পড়ে। টানা আড়াই বছর ওষুধ খেলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। এখন অস্ত্রোপচার করার উপক্রম হয়েছে।

এদিকে আহনাফের বাবা মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের দেড়মাস আগে পায়ুপথে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। করোনায় চাকরিও হারিয়েছেন তিনি।পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আলাউদ্দিনের চাকরি না থাকায় চিকিৎসা ও সংসার চালানোর জন্য অর্থের জোগান কিভাবে করবেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই তার স্ত্রী রোজিনা আক্তারের।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের হাউজিং এলাকার একটি ভাড়াবাসায় ছয় বছর ধরে বসবাস করেন এ দম্পতি। তাদের দুজনের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ইসলামাবাদে। আহনাফ রিয়ান ছাড়াও আরমান ইসলাম নামের দুই বছরের একটি সন্তান আছে তাদের।

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন একটি টায়ার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। করোনার প্রভাবে প্রতিষ্ঠানটিতে কাজের চাপ কম থাকায় ছয় মাস আগে চাকরি চলে যায় আলাউদ্দিনের। সংসারের হাল ধরতে দুমাস আগে একটি ডিটারজেন্ট পাউডার কোম্পানিতে চাকরি নেন তার স্ত্রী রোজিনা। কিন্তু ছোট্ট দুই সন্তানকে সময় দিতে গিয়ে চাকরিটা করতে পারেননি। ফলশ্রুতিতে অভাব তাদেরকে পেয়ে বসে। করোনার এই সময়ে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকেও তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছেন না তারা।

আগামী এক মাসের মধ্যে রিয়ানের হার্টের ছিদ্র অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. নুরুন্নাহার ফাতেমা। অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এদিকে রোজিনার স্বামী আলাউদ্দিনের ক্যান্সার ধরা পড়ায় তাকে মোট পাঁচবার কেমোথেরাপি ও ২৫ বার রেডিওথেরাপি দিতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে কয়েকটি থেরাপি নিয়ে আর দিতে পারছেন না।

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘কেমোথেরাপির জন্য দৈনিক ১৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং রেডিওথেরাপির জন্য প্রয়োজন তিন হাজার টাকা দরকার। তারপর অপারেশন করাতে হবে। কিন্তু এত টাকা পাব কোথায়?’

jagonews24

স্বামী-সন্তানের এই অবস্থায় বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন রোজিনা আক্তার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের ছয় মাসের বাসা ভাড়া জমে গেছে। এমনও দিন গেছে ভাত রান্না করার জন্য চাল ছিল না। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খাবার এনে সন্তানদের দিয়েছি।

এলাকার একটি সংগঠনের (সিদ্ধিরগঞ্জ মানবকল্যাণ সংস্থা) ভাইয়েরা জানতে পেরে আমাদেরকে কিছু টাকা দিয়ে সহায়তা করছেন। ওই টাকা দিয়ে আমার স্বামী ও সন্তানের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু ছেলের অপারেশনের জন্য এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমি এতো টাকা কই পাব?’

আকুতি জানিয়ে রোজিনা বলেন, ‘স্বামী আর সন্তানের কিছু হয়ে গেলে আমার পথে নামতে হবে। আমি আমার স্বামী ও সন্তানের জন্য সবার কাছে সহায়তা চাই। আপনারা কিছু একটা করেন।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘তাদেরকে কাগজপত্রসহ (মেডিকেল সার্টিফিকেট) আসতে বলুন। আমরা যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করব।’

এস কে শাওন/এসআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।