মিশ্র ফল-সবজি চাষে ঝুঁকছেন রাজশাহীর কৃষকরা

উন্নত বিশ্বের ন্যায় প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দেশের কৃষিতেও। একই জমিতে ফলছে হরেক রকমের সবজি, ফলমূল। উত্তরের জনপদ রাজশাহীতেও ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে মিশ্র চাষাবাদ। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার দামকুড়া, হুজুরীপাড়া, পারিলাসহ কয়েক এলাকার একাধিক কৃষক গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফল-সবজির বাগান। একই সঙ্গে সেই বাগানে করেছেন মাল্টা, ড্রাগন, শসা, পেয়ারা, পেঁপে, লেবু, লালশাক, বাঁধাকপি আর মরিচের চাষ।
রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি খরিপ-২ মৌসুমে রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে মিশ্র সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে চলতি মৌসুমে মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, লাউ, করলা, ঢ্যাঁড়শ, মুলা, পটল, লালশাক ও শিম চাষ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। অল্প জমিতে কম খরচে অধিক মাত্রায় ফসল উৎপাদনের জন্য মিশ্র ফসল চাষে কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছেন। জেলায় সবচেয়ে বেশি মিশ্র সবজি চাষ হয়েছে বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলায়।
মিশ্র ফসল চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন পবা উপজেলার হুজুরীপাড়া ইউনিয়নের কৃষক সারোয়ার জাহান। দুই বছর আগে ৯ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন বারি-১ জাতের মাল্টা ও সবজির মিশ্র ফসলের বাগান। তার উৎপাদিত মাল্টা এলাকার চাহিদা পূরণ করে নগরীর বিভিন্ন ফলের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।
সারোয়ার জাহান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মরিচের বীজ বপন, সার ও কীটনাশক বাবদ খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। একই জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষও করেছি। এরই মধ্যে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বাদে মরিচই বিক্রি হয়েছে ৪৫ হাজার টাকার।’
একই ইউনিয়নে আট বিঘা কমলা ও মাল্টার বাগানে মরিচ চাষ করেছেন আলমগীর হোসেন। এই মৌসুমে মরিচের ভালো দাম পেয়েছেন। বাগানের ফল পাওয়া শুরু হলেই খরচ উঠে যাবে। এতে ভালো লাভ আসবে বলে মনে করছেন এই চাষি।
দামকুড়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্ৰামের কৃষক মোজাম্মেল হোসেন জানান, তিনি তিন বিঘা পেঁপের জমিতে মরিচ ও বাঁধাকপির মিশ্রচাষ করেছেন। এরই মধ্যে পেঁপে ও মরিচ বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন।
জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোজদার হোসেন জানান, চলতি খরিপ-২ মৌসুমে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে মিশ্র ফল-সবজি চাষ হয়েছে। অল্প সময়ে অধিক মুনাফা পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে মিশ্র সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
এসআর/জিকেএস