এবারের মৌসুমে বান্দরবানে পর্যটক মেলা ভার

নয়ন চক্রবর্তী নয়ন চক্রবর্তী বান্দরবান
প্রকাশিত: ০৯:০৭ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২২

পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বছরজুড়েই থাকে পর্যটকের আনাগোনা। শীতকালে এ সংখ্যা বেড়ে যায় বহুগুণ। ফলে স্থানীয় হোটেল-মোটেলও পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে। কিন্তু এবারের শীতে পর্যটকশূন্য বান্দরবান। ফলে প্রতিদিনই লোকসান গুনছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

বৃ্হস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে পর্যটনখাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি রুমা ও রোয়াংছড়িতে বিভিন্ন সশস্ত্রগোষ্ঠীর আনাগোনা বাড়ছে। এসব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। ফলে থানচি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি ও বান্দরবান সদর এলাকার পর্যটন স্পটে ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হলেও রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

১৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় রুমা-রোয়াংছড়ির পর্যটন স্পট ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। সে নিষেধাজ্ঞা ক্রমান্বয়ে থানচি-আলীকদম উপজেলায়ও দেওয়া হয়েছিল। পরে থানচি-আলীকদম ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হলেও রুমা-রোয়াংছড়িতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। দীর্ঘ সময় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পর্যটন শিল্পে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকিট কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মৌসুমে এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে হাজার দুইয়েক পর্যটকের আগমন ঘটত। এবার একই সময়ে গত এক সপ্তাহে সাতশ পর্যটকও আসেননি।

নিলাচল পর্যটন কেন্দ্রের টিকিট কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাহে দৈনিক গড়ে এক থেকে দেড়শ পর্যটক এসেছে। তাদের মধ্যে স্থানীয় পর্যটক বেশি।

জিপ-মাইক্রোচালক সমিতির সভাপতি মো. জাফর ইকবাল জাগো নিউজকে জানান, পাহাড়ে যৌথবাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করায় পর্যটকবাহী গাড়ি রুমা-রোয়াংছড়ি প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। ফলে নীলগিরি, থানচি, সদর এলাকার কয়েকটি স্পটে গাড়ি চললেও পর্যটক নেই বললেই চলে।

হোটেল হিলটনের ম্যানেজার আক্কাস উদ্দীন সিদ্দিকী জানান, হোটেলে ৭২টি রুমে প্রতি শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন ৪০-৬০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং থাকতো। এবার পর্যটকের তেমন সাড়া নেই।

হোটেল গ্রান্ডভ্যালির ম্যানেজার মো. সুমন জানান, হোটেলে মাত্র তিনটি রুম বুকিং দেওয়া আছে।

বান্দরবান হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। এখনো রুমা-রোয়াংছড়ি ভ্রমণে নিষধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা নেই। ফলে অনেকটা আতঙ্কিত হয়েই বান্দরবান ভ্রমণে আগ্রহ হারাচ্ছেন পর্যটক।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজি জাগো নিউজকে বলেন, সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। ফলে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। তবে স্থানীয়দের জন্য চলাচল উন্মুক্ত রয়েছে।

নয়ন চক্রবর্তী/এএইচ/এএসএম

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।