নার্সারিতে জামাল খানের বছরে আয় ৫ লাখ টাকা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১০:০৫ এএম, ২০ মার্চ ২০২৩
জামাল খানের নার্সারিতে দেড়শতাধিক প্রজাতির চারা গাছ পাওয়া যায়

১০ বছর বয়সে মাকে হারান জামাল খান। কিছুদিন পর বাবা আবার বিয়ে করেন। অভাব অনটনের সংসারে প্রাথমিকের গণ্ডি পার হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। অনাদর আর অবহেলায় বেড়ে ওঠে তার জীবন। এক সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা বিক্রি শুরু করেন। বেশ কয়েক বছর মাছের ব্যবসা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় হয়। সে টাকায় ১০ বছর আগে শুরু করেন নার্সারি।

প্রথমে কিছু বনজ ও ফলদ চারা দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে বেড়েছে নার্সারির পরিধি। নার্সারির পেছনে এখন তার প্রায় অর্ধ কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে। হয়েছে অন্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও। তার এমন সফলতায় উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বেকার যুবকরা।

নার্সারিতে জামাল খানের বছরে আয় ৫ লাখ টাকা

জামাল খান নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের রহিলা এলাকার মৃত মোমরেশ খানের ছেলে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের চারা ও বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। তার নার্সারিতে এখন দেড় শতাধিক বিভিন্ন ফলদ, বনজ ও ঔষধি চারা আছে।

জামাল খান বলেন, ২০১২ সালের শেষ দিকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নার্সারি শুরু করেছি। আমার নার্সারিতে সারাবছর চার-পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে। মৌসুমে ১০-১২ জন শ্রমিক প্রয়োজন হয়। নার্সারির লভ্যাংশ দিয়ে বাড়ির পাশে ২৭ শতাংশ জমি কিনেছি। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলেকে কাজের জন্য প্রবাসে পাঠিয়েছি।

নার্সারিতে জামাল খানের বছরে আয় ৫ লাখ টাকা

তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ ক্রেতা আমার নার্সারিতে এসে পছন্দের চারা কেনেন। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার চারা বিক্রি হয়। শ্রমিকের বেতন এবং অন্য খরচ বাদে মাসে গড়ে ৩৫-৪০ হাজার টাকা আয় হয়। তবে মৌসুমের সময় বিক্রি বাড়ে তখন মাসে আয় অর্ধ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সব মিলিয়ে বছরে ৫ লাখ টাকার বেশি আয় থাকে আমার।

নার্সারির পরিচর্যাকারী নুর মোহাম্মদ বলেন, বেশ কয়েক বছর যাবত আমি এ নার্সারিতে কাজ করছি। প্রতিমাসে মাসে ৯ হাজার টাকা বেতন পাই। নার্সারিতে কাজ করে অনেক ভালো আছি।

নার্সারিতে জামাল খানের বছরে আয় ৫ লাখ টাকা

চারা কিনতে আসা হুমায়ন সিকদার বলেন, এ নার্সারিতে তুলনামূলক কম দাম ও ভালো মানের চারা পাওয়া যায়। তাই যেকোনো গাছের চারা প্রয়োজন হলেই এখানে চলে আসি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেহা নুর জাগো নিউজকে বলেন, নার্সারি একটি লাভজনক ব্যবসা। বেকার যুবকরা নার্সারি করে স্বাবলম্বী হতে পারে। সম্ভাবনাময় এ খাতকে বড় করতে কৃষি অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের কাছে এলেই সহযোগিতা করে থাকি। নার্সারির উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে কাজ করে যাচ্ছি।

এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।