নীলফামারী
লাগামহীন সবজি বাজার, নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের

রমজানকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবমূল্য। চাহিদা বেশি থাকায় শসা, আলু, বেগুন, কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। কৃষকদের থেকে কম দামে কেনা সবজি কয়েক মিনিটের ব্যবধানে হচ্ছে দ্বিগুণ। মাছের দামও বাড়ছে। এমন অবস্থায় নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি কম থাকায় বেড়েছে পণ্যের দাম। তবে বাজার স্বাভাবিক আছে বলে দাবি তাদের।
সরজমিনে নীলফামারীর বড়বাজারের বিভিন্ন দোকান ও আড়ত ঘুরে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬-১৮ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ৩৫–৫৫, পেঁয়াজ ২০–২৫, শুকনো মরিচ ৩৮০, শসা ১৫–২০ ও বেগুন ১৮–২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া লেবুর হালি ১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পাইকারি বাজারের পাশেই খুচরা বাজারে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একই পণ্যের দাম বেড়ে হচ্ছে দিগুণ। প্রতিটি সবজিতে দাম বাড়ছে ১০-২০ টাকা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন কৃষক ও গ্রাহকরা। এছাড়া তুলনামূলক বেড়েছে মাছেরও দাম। তবে খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, গ্রাহক কম থাকায় ভালো মানের সবজি ও পণ্যের দাম কিছুটা বেশি।
খোকশাবাড়ি এলাকার আল আমিন ইসলাম। ৩ মণ কাঁচামরিচ নিয়ে বাজারে এসেছেন। বুধবার ৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও আজ বিক্রি করেছেন ৪৫ টাকা।
আল আমিন বলেন, ‘বুধবার মরিচ বিক্রি করেছি ৫৮ টাকা, আজ দাম একটু কম। আমার থেকে আড়তদার কিনে তিনি আবার ৫৫ টাকা বেচলো। একটু আগে শুনলাম কাঁচাবাজারে নাকি ৬০-৭০ টাকা। এতে তো আমাদের কৃষকদের ক্ষতি৷ সব কিছুর নাকি দাম বেশি। আমরা কৃষকরা তো দাম পাই না।’
শরিফুল ইসলাম নামে আরেক কৃষক বলেন, আজ মরিচ বিক্রি করলাম ৪০ টাকা। আমার কাছে থেকে কিনে ৬০ টাকা বেচতেছে। আমরা যা পাই তাই আবাদ করি আর দাম পায় আড়তদাররা।’
তবে কাঁচামরিচের আড়তদার মোসফেকুর রহমানের দাবি, ‘আজ মরিচের আমদানি বেশি তাই দামও কম। অন্য সবজির দাম বেশি। এখানে কৃষকদের আনা জিনিস ৩ বেচা হয়। একবার আমরা কিনি, একবার খুচরা দোকানদার কেনে, আরেকবার গ্রাহক কেনে৷ দাম তো বেশি হবেই।’
গৃহিণী শিরিন আক্তার এসেছেন রমজানের বাজার করতে৷ তবে সবজির দাম বেশি হওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন তিনি।
শিরিন আক্তার বলেন, ‘সব কিছুর দাম বেশি। যেটাই সখ করে কিনতে যাই সেটাতেই মন খারাপ হয়৷ আমাদের মতো যারা সাধারণ মানুষ আছে তাদের তো অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই রমজানে যেন বাজার টা স্বাভাবিক থাকে। জিনিসের দাম কমে। তাহলে আমরা একটু শান্তিতে থাকি।’
রিয়াদ হোসাইন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে আগের তুলনায় মাছের দাম অনেক বেশি। রুই কাতল এমনকি পাঙাসের দাম দিগুণ। এভাবে বাজার করা মুসকিল।’
এনজিও কর্মী আব্দুল শাফি বলেন, ‘তুলনামূলক বাজারে দাম অনেক বেশি। আমাদের কথা চিন্তা করে হলেও দাম টা একটু কমানো উচিত।’
হাট ইজারাদারের প্রতিনিধি মানিক হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বাজারের দাম ততটা বেশি না। এখানে উৎপাদন কম এবং সে তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় বাজারে দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে এটা বেশি নয়।
রাজু আহম্মেদ/এসজে/জিকেএস