রপ্তানিতে টিকে আছে বিলোনিয়া বন্দর
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার কথা থাকলেও ১৪ বছরেও তেমন কিছু করতে পারেনি বিলোনিয়া স্থলবন্দর। ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে অবস্থিত এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে পণ্য রপ্তানি হলেও আমদানি একেবারেই কম। ফলে একমুখী বাণিজ্যের বন্দরে রূপ নিয়েছে বিলোনিয়া।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে বিলোনিয়া স্থলবন্দর চালু হয়। চালুর পর থেকে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক থাকলেও ২০১৯ সালে বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরুর পর আন্তর্জাতিক সীমারেখায় অবস্থিত বলে বিএসএফ কাজ বন্ধ করে দেয়। প্রায় চার বছর পার হলেও এর সমাধান মেলেনি।
আরও পড়ুন- হাত বদলেই বাড়ে সবজির দাম
এ স্থলবন্দর চালুর ফলে ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি বেড়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করেন। এতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছরেও তা সফলতার মুখ দেখেনি।
বাংলাদেশের স্থল বাণিজ্যের সিংহভাগই ভারতের সঙ্গে। কারণ ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর পঞ্চম দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ লোক প্রতি বছর ভারতে পর্যটন, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা নিতে যান। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার হলেও এ স্থলবন্দর অনেকটা নিষ্প্রাণ।
বিলোনিয়া স্থলবন্দর অফিস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে সব পণ্য রপ্তানি হলেও ভারত থেকে পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, মরিচ, পাথর, কয়লা, সিমেন্ট, ইট, বালি, চিনি, ভুট্টা, গম, মসুর ডাল, ছোলা, সয়াবিন তেলসহ ১৫টি পণ্য আসার কথা এ বন্দর দিয়ে।
আরও পড়ুন- দখল-ভরাটে হারিয়ে যাচ্ছে পুরোনো খাল
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা আল-আমিন ভূঁইয়া জানান, আন্তর্জাতিক সীমারেখার ১৫০ গজের মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণে গেলে দুই দেশের সম্মতি লাগে। এখানে অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে ভারত অলিখিতভাবে না করে দিয়েছে। এটা নিয়ে দিল্লিতে দ্বিপক্ষীয় সভা হয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটার সমাধান হবে। আমাদের আরও দুটি স্থলবন্দরে এ সমস্যা ছিল, সেখানেও সমাধান হয়েছে।
বিলোনিয়া স্থলবন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট, প্লাস্টিক পণ্য, বিভিন্ন রকম রশি ও বালি যাচ্ছে। ভারত থেকে বিগত প্রায় দুই বছর পর ৪ টন পেঁয়াজ এসেছে। ভারত থেকে ১৫টি পণ্য আসার কথা থাকলেও ভারতীয় সীমান্তের আশপাশে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে খরচ বেশি হয় বলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করেন না।
আরও পড়ুন- বোরোর জমি ফেটে চৌচির, ধান বাঁচাতে কৃষকের আহাজারি
আমদানিকারকরা জানান, অবকাঠামোর দিক থেকে এ স্থলবন্দর এখনো পূর্ণতা অর্জন করতে পারেনি। এ কারণে ব্যবসায়ীরা এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তেমন আগ্রহী হয়ে উঠছে না।
বিলোনিয়া স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম জানান, দ্বিমুখী বাণিজ্য হলে বন্দরটি পূর্ণতা পাবে।
জানতে চাইলে ফেনীস্থ ৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, বিলোনিয়া স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের জায়গার বিষয়টি সমাধানে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশা করি শিগগির এ বিষয়ে সফলতা আসবে।
আবদুল্লাহ আল মামুন/এফএ/জেআইএম