জয়পুরহাটে হালিতে ৭ টাকা কমলো ডিমের দাম

জয়পুরহাটের কয়েকদিন আগে স্থানভেদে ডিম ৪৫ টাকা হালি বিক্রি হয়েছিল। দুদিনের ব্যবধানে দাম কমেছে হালিতে ৪-৭ টাকা।
খামারি ও ডিম ব্যবসায়ীদের দাবি, মাংস ও মাছের দাম বাড়ায় ডিমের ওপর চাপ বেড়েছিল। তাই দামও বাড়ে। জেলায় প্রতিদিন প্রায় এক লাখ পরিমাণ লাল ডিম ও সাদা ডিমের প্রয়োজন হলেও অল্প কিছু পরিমাণ স্থানীয়ভাবে পূরণ হয়।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) সকালে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুরগির ডিমের হালি ৩৮-৪১ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সাদা ডিম প্রতি হালি ৩৭ ও হাঁসের ডিম ৫৫ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু দাম কমলেও ডিম কেনা থেকে বিরত থাকছেন অধিকাংশ ক্রেতা।
মাছুয়া বাজারে গত ২০ বছর ধরে পাইকারি ও খুচরা ডিম বিক্রি করছেন আসলাম হোসেন বাবু। তিনি বলেন, গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা থেকে লাল ডিম ও রাজশাহীর তাহেরপুর থেকে সাদা ডিম আসে। সেখানকার সমিতিগুলো যেভাবে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় আমরা সেভাবে বিক্রি করি। আমরা ১০০ পিস লাল ডিম ৯০০ টাকায় কিনছি। ১০০ পিসে পরিবহন খরচ আগে ছিল ২০ টাকা এখন ৩০ টাকা। বিক্রি করছি ৯৪০-৯৫০ টাকা। একইভাবে সাদা ডিম কিনছি ৯৩০ টাকায়। পরিবহন খরচ ৩০ টাকা। বিক্রি করছি ৯৮০ টাকায়।
জামালগঞ্জের খামারি আমজাদ সরদার বলেন, লোকসানে পড়ে গত কয়েক বছরে গ্রামে ছোটর ব্রয়লার মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে মুরগির খাদ্যের বস্তা ২ হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়। বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ৬০০ টাকা। যে কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। রমজানে ডিমের চাহিদা অন্য সময়ের চেয়ে অনেক কম। তাই দামও কমেছে।
এদিকে নতুনহাট এলাকার খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ী রানা হোসেন বলেন, দুদিনের ব্যবধানে হালি প্রতি ৪-৭ টাকা কমলেও ক্রেতারা খুব কম ডিম কিনছেন।
ক্রেতারা বলছেন, মাছ-মাংসের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় জায়গা নিয়েছে ডিম। কিন্তু সেই ডিমের দামও কয়েকদিন আগে ছিল আকাশ চুম্বী। ৪৫-৪৬ টাকার কমে বাজারে মুরগির ডিম পাওয়া যাচ্ছিল না। যা এখন ৩৮-৪১ টাকা করে হালিতে পাওয়া যাচ্ছে।
সদরের মাছুয়া বাজারে বাজার করতে আসেন গৃহিণী নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, রমজান এলেই অন্য সময়ের চেয়ে সব জিনিসের দাম বাড়ে। দামের কারণে মাছ, মাংসের বাজারে সব সময় যাওয়া হয় না। তাই আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের ভাতের সঙ্গে ডিম ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ার ক্ষমতা থাকে না। এখন ডিমের দাম কমায় কিছুটা স্বস্তি লাগছে।
জয়পুরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহফুজার রহমান বলেন, বিদেশি কাঁচামালের দাম বাড়ায় পোলট্রি খাদ্যের দামও বাড়ছে। ফলে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পণ্যের ওপরও প্রভাব পড়েছে। পোলট্রি খাদ্যের দাম কমলে ডিমের দামও কমে যায়। আবার অনেক সময় ডিমের চাহিদার কারণে দাম ওঠানামা করে। রমজানের মাস চলছে। তাই ডিমের চাহিদা একটু কম। তাই দাম কমেছে।
এসজে/জিকেএস