কাজে আসছে না ১৩ কোটি টাকার সেতু

মূল কাজ শেষ হলেও করা হয়নি সংযোগ সড়ক। এজন্য কোনো কাজেই লাগছে না কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী বহ্নি নদীর ওপর নির্মিত সেতু। সেতুটি নির্মাণে সাড়ে ১৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
একপাশে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়ন। অপর পাশে নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেহপুর। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে একসময়ের খরস্রোতা বহ্নি নদী। দূরত্ব কমিয়ে দুই জেলার মানুষের সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে নদীর ওপর ১৪০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এরই মধ্যে শেষ হয়েছে মূল সেতুর কাজ। নেত্রকোনা অংশ সংযোগ সড়কও হয়েছে। তবে কিশোরগঞ্জ অংশে মাটি ভরাট ও সংযোগ সড়ক না হওয়ায় কোনো কাজে আসছে না গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি। দীর্ঘদিন অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকায় বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে সেতুর নিচে মাটি ফেলে কোনো রকমে যাত্রী ও ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। কৃষিপণ্য পরিবহনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। দ্রুত সেতুটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বহ্নি নদীর ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর মূল কাজ শেষ হয় এক বছর আগে। তবে এখনো সেতুর একপাশে করা হয়নি সংযোগ সড়ক।
সেকান্দরনগর গ্রামের মুস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দক্ষিণ পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকার সেতুটি এখন আমাদের জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’
কৃষক হেকিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের এলাকা কৃষিপ্রধান। সেতুর সামান্য রাস্তার কাজের জন্য কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি, দ্রুত সংযোগ সড়ক করে সেতুটি সচল করা হোক।’
কথা হয় ধলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফরুজ আলম ঝিনুকের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক না থাকায় বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারগুলোকে অন্তত ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে এ দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে। সেতুটি স্বাভাবিক করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় মাটি ভরাট ও সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ আছে। সব জটিলতা কাটিয়ে খুব শিগগির সেতুটি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে।
এসআর/জেআইএম