বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিলো মেয়ে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০৪:০৪ পিএম, ০৩ মে ২০২৩
ইনসেটে এসএসসি পরীক্ষার্থী ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি

বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি নামে এক পরীক্ষার্থী। সে চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী।

বুধবার (৩ মে) আশিকাটি ইউনিয়নের এম এম নূরুল হক উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে ইংরেজি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি। এর আগে সকাল ৭টায় নিজ বাড়িতে তার বাবা ইন্তেকাল করেন।

জানা যায়, ফেরদৌসী আক্তার জুঁহি এবছরশাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। সে একই ইউনিয়নের ভাটেরগাঁও এলাকার বেপারী বাড়ির (ইচলী বাড়ি) মৃত মকবুল হোসেন বেপারীর ছোট মেয়ে।

স্থানীয়রা জানায়, মৃত মকবুল হোসেন বেপারী দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে তিনি ব্রেনস্ট্রোক করেন এবং একবার গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। সর্বশেষ দুদিন আগে তিনি জ্বর ও পেটব্যথা নিয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। বুধবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মকবুলের দুই মেয়ে।

মকবুল হোসেনের ফুফাতো ভাই আব্দুল বারেক খান বাবুল বলেন, মকবুল সকালে মারা যায়। আজ আবার তার ছোট মেয়ের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। বাবার মৃত্যুতে মেয়েতো স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। তারপরও সবাই মিলে বুঝিয়ে তাকে পরীক্ষা দিতে পাঠাই। আল্লাহ জানেন কী পরীক্ষা দিয়েছে।

স্থানীয় মেম্বার সোহাগ পাটোয়ারী বলেন, মৃত মকবুল হোসেন দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। পরিবারটির অবস্থাও তেমন ভালো না। সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করলেও তার মেয়েকে পরিবারের সবাই বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে যেতে বলে। সবার কথাই সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বুধবার বাদ আসর মৃতের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শাহতলী জোবাইদা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সোহেল রুশদী জানান, ফেরদৌসী একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। আমাদের বিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে তার শ্রেণি রোল নম্বর ছিল ৩।

তিনি বলেন, তার বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক তাদের বাড়িতে আমাদের বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক গিয়েছেন। তিনি পরিবারটির পাশে আছেন। আমরা ফেরদৌসীর পাশে আছি এবং সে যেন কোনোভাবেই মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে সেই চেষ্টা করছি। সামনে যাতে সবগুলো পরীক্ষায় সে অংশগ্রহণ করে সেজন্য আমরা তাকে সহযোগিতা করবো। এছাড়াও ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ফেরদৌসীর যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয় আমি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করবো।

নজরুল ইসলাম আতিক/এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।