রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড
চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে ‘দুর্নীতিতে জড়িত’ সাবেক সচিব আনারুল হক
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে চেয়ারম্যানের পদটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শূন্য পড়ে আছে। সর্বশেষ চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হয় ৩০ মার্চ। খালি পড়ে থাকা পদটি পেতে বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষকরা তদবির চালাচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। চেয়ারম্যান হওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় চারজনের নামও আলোচনায় এসেছে।
তারা হলেন- বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কালাচাঁদ শীল, রাজশাহী সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব শহীদ বুদ্ধিজীবী কলেজের অধ্যক্ষ আনারুল হক প্রাং।
এদিকে চেয়ারম্যান পদে আনারুল হকের নাম আলোচনায় আসায় বিস্মিত হচ্ছেন শিক্ষাবোর্ড সংশ্লিষ্ট অনেকেই। কারণ বোর্ডের দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। ওই মামলায় দুর্নীতির ঘটনাটিও প্রমাণিত হয়েছে। এ অবস্থায় তিনি চেয়ারম্যান হলে বোর্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বোর্ড সংশ্লিষ্টরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বোর্ডের অভ্যন্তরে রাস্তার কাজ ও বিভিন্ন সংস্কারমূলক কাজ করে প্রায় ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনটি মামলা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন প্রাথমিক তদন্তে অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পেয়ে ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলাগুলো করে।
আরও পড়ুন: কাজ না করেই ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সচিবসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মামলায় বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সচিব প্রফেসর ড. মো. আনারুল হক প্রাংসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়। তবে মামলা চলাকালে আত্মসাতকৃত ১৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা ২০২১ সালে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের ব্যাংক হিসাবে জমা দেন আসামিরা। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনেও এসব তথ্য উঠে আসে। আত্মসাতের সমপরিমাণ টাকা বোর্ডের ফান্ডে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি পান।
দুদকের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মামলায় ২০২২ সালে চূড়ান্ত রিপোর্ট সত্য (এফআরটি) প্রদান করা হয়েছে। ওই সময়ই মামলার কার্যক্রম শেষ হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ হওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আবেদন করতে হয়। সেখানে চারজনই আবেদন করেছেন। আবেদনকারীদের একজন আনারুল হক প্রাং। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে আমরা এটি নিশ্চিত হয়েছি।
এদিকে বোর্ডের একাধিক সূত্র বলছে, অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা যদি এবার বোর্ডে সর্বোচ্চ পদে আসার সুযোগ পান তবে দুর্নীতির পাশাপাশি বিশৃঙ্খলাও দেখা দেবে। ওই সময় দুর্নীতি মামলায় যারা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনারুল হক প্রাং জাগো নিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে মামলা ছিল সেগুলো অনেক আগেই এফআরটি হয়ে গেছে। এগুলো থাকলে কথা হতো। কিন্তু যেহেতু এগুলো নেই তাই কিছু বলা যাচ্ছে না। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের বিষয়ে আমার আর কোনো দুর্নীতির মামলা নেই।
তিনি দাবি করেন, চেয়ারম্যান হওয়ার কোনো চেষ্টাও তিনি করছেন না। সরকার যেখানে তাকে দেবে সেখানেই তিনি কাজ করে যাবেন।
সাখাওয়াত হোসেন/এসজে/জেআইএম