ঋণের নামে প্রতারণা

সাবেক যুবলীগ নেতা ডিজে শাকিলের ১০ বছরের কারাদণ্ড

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:০৭ পিএম, ০৪ জুন ২০২৩

চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি রাব্বি শাকিল ওরফে ডিজে শাকিলসহ (৩২) তিনজনকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৪ জুন) সকালে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুইজন হলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র গ্রামের হারুন রশিদ ওরফে সাইফুল ইসলাম (২৬) ও তাড়াশ উপজেলার কুসুমবি গ্রামের হুমায়ুন কবীর (২৮)। ডিজে শাকিল তাড়াশ উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি কাজী গোলাম মোস্তফার ছেলে।

বিকেলে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০২০ সালে শাকিল ও হারুনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলার বাদী বগুড়ার বাসিন্দা আমানত উল্লাহ তারেক।

jagonews24

মামলার অভিযোগ করা হয়, তারেক এবং অভি নামে দুই ব্যবসায়ী ‘ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিস’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ থেকে ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখেন। এরপর তারা যোগাযোগ করলে তাদের দুজনকে সাড়ে চার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। এজন্য ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিসের পক্ষ থেকে ডিজে শাকিল ও হারুন তাদের বাড়ি পরিদর্শন করেন।

এসময় তারা পাঁচ শতাংশ কমিশনে ঋণ দিতে চান। এই প্রলোভন দেখিয়ে তারা প্রায় ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ঋণ দেওয়ার জন্য তারা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাগজপত্র এবং চেকের স্ক্যান কপি ইমেইলে পাঠান। কিন্তু ওই চেকের টাকা তোলার মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তাদের আসল কপি দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সন্দেহ হলে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তারা প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ নিয়ে প্রথমে দুজনের নামে মামলা করা হয়। পরে পুলিশের তদন্তে আরেক আসামি হুমায়ুন কবীরকে শনাক্ত করা হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তিন আসামিকেই জেল-জরিমানা করেছেন।

ইসমত আরও বলেন, আসামি শাকিলকে আদালত একটি ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় তাকে একই জেল-জরিমানা করা হয়।

আসামি হারুন ও হুমায়ুনকে একটি ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ধারায় আদালত এ দুইজনকে একই জেল-জরিমানা করেছেন। আসামিদের সাজা একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।

রায় ঘোষণার সময় ডিজে শাকিল ও হারুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের দুজনকেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে আসামি হুমায়ুন কবীর পলাতক।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালে ১২ আগস্ট বিকেলে তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সামনের একটি সুসজ্জিত অফিসে অভিযান শুরু করে বগুড়া সাইবার ক্রাইম ইউনিটের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ইমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে একটি দল। ওই অভিযানে ১২০০ কোটি টাকার চেকসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

 

এম এ মালেক/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।