রাসিক নির্বাচনে অংশ নিয়ে দলের মুখোমুখি বিএনপির ১৬ নেতা-নেত্রী
আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় রাজশাহী মহানগর বিএনপির ১৬ নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছে নগর বিএনপি। সোমবার (৫ জুন) দুপুরে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (৪ জুন) দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা ও সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ১১ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বাকি ৫ জন সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড কাউন্সির পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নগর বিএনপির ১৬ নেতৃবৃন্দ হলেন, নগর বিএনপির রাজপাড়া থানা কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বদি (৬ নম্বর ওয়ার্ড), ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু বকর কিনু (১১ নম্বর ওয়ার্ড), শাহ মখদুম থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি টুটুল (১৪ নম্বর ওয়ার্ড), সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান লিটন (১৫ নম্বর ওয়ার্ড), নগর যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি বেলাল হোসেন (১৬ নম্বর ওয়ার্ড), নগর যুবদলের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক রনি হোসেন রুহুল (১৬ নম্বর ওয়ার্ড), নগর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান টিটু (১৯ নম্বর ওয়ার্ড), ২২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা রিপন (২২ নম্বর ওয়ার্ড), বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলিফ আল মাহমুদ লুকেন (২৫ নম্বর ওয়ার্ড), নগর বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আমিন আজব (২৭ নম্বর ওয়ার্ড), মতিহার থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল হাসান বাচ্চু (২৮ নম্বর ওয়ার্ড), নগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুসলিমা বেগম বেলী (সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ড), নগর মহিলা দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলতাফুন নেসা পুতুল (সংরক্ষিত ৯, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড), নগর মহিলা দলের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক সামসুন নাহার (সংরক্ষিত ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড), নগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি শাহনাজ বেগম শিখা (সংরক্ষিত ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড), নগর মহিলা দলের ৪ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক আয়েশা খাতুন মুক্তি (সংরক্ষিত ২৫, ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ড)।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তারা নির্বচনে অংশ নিয়েছেন। তাই পার্টির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাম ও পদবীসহ তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকেই এই চিঠি চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলে, বিএনপি এই সরকারের অধীনে আর কোনো প্রকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ তারা দলের একজন সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর আগে সিলেট ও গাজীপুরেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। রাজশাহীতে তাই করা হচ্ছে।
দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর মহিলা দলের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক ও সংরক্ষিত ১৩, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী সামসুন নাহার বলেন, দল যেটা ভালো মনে করেছে সেটা করেছে। এই সিদ্ধান্তকে কী বলবো। আমাদের কিছু বলার নেই।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবহান লিটন বলেন, বহিষ্কারের চিঠির বিষয়ে আমার জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। আমি দলের কোনো পদে নেই। ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় বলা হয়েছিল দলের পদে থেকে কাউন্সিলর ভোট করা যাবে না। তখন আমি দল থেকে পদত্যাগ করেছি। এরপর আর দলের কোনো পদে আমি নেই। তখন থেকেই আমি কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছি। এখন দল কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের ব্যাপার।
সাখাওয়াত হোসেন/এফএ/এমএস