রাঙ্গামাটির জেলা পরিষদ সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধ দুদকের মামলা

ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
শুক্রবার (৯ জুন) সকালে মামলার বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গামাটি দুদকের উপ-পরিচালক জাহিদ কামাল।
তিনি বলেন, প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রৌকশলী, উপ-সহকারী প্রৌকশলী, ঠিকাদার, ইউপি সদস্যসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সহকারী পরিচালক আহমদ ফরহাদ হাসন বাদী হয়ে চারটি মামলা করেন।
প্রথম এজাহারে বলা হয়েছে, রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলার ৪ নম্বর ভূষণছড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত কামিনী চাকমার জমির ওপর মৎস্য বাঁধ ও পাকা সেচ ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৫৩ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রৌকশলী বিরল বড়ুয়া, সহকারী প্রৌকশলী জ্যার্তিময় চাকমা, উপ-সহকারী প্রৌকশলী রিগ্যান চাকমা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সমৃদ্ধি এন্টারপ্রাইজের নামে মামলা করা হয়। প্রকল্পটি ২০১৭-১৮ অর্থবছর গৃহীত হয়েছে বলে জানানো হয় এজাহারে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য ২৫ জুন
দ্বিতীয় নম্বর এজাহারে বরকল উপজেলাধীন সুবলং বাজার পানীয় জলের ব্যবস্থাকরণসহ গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পর মাধ্যমে ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাৎর অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় উপরোক্ত তিন প্রকৌশলীর পাশাপাশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাংচিং এন্টারপ্রাইজের চিংহন রাখাইনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটিও ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গৃহীত হয়।
তৃতীয় নম্বর এজাহারে বরকল উপজেলাধীন সুবলং ইউনিয়ন সুবলং কমিউনিটি সেটের ঘর ও পাকা সিঁড়ি নির্মাণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলায় তিন প্রকৌশলীর পাশাপাশি জেলা পরিষদের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমান সিলেট কর্মরত) কাজী আবদুস সামাদ, ঠিকাদার অমলেন্দু চাকমা ও জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমার নামে মামলা হয়।
চতুর্থ নম্বর এজাহারে বরকল উপজেলাধীন পূর্ব এরাবুনিয়া মৎস্য বাঁধ থেকে হারুন টিলা এলাকার আহাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার নামক প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৩ টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকল্পটি গৃহীত হয় ২০১৬-১৭ সালে এবং প্রকল্পে ব্যয় ছিল ১০ লাখ টাকা।
তবে তদন্তে উক্ত স্থানে কোনো মৎস্য বাঁধ এবং হারুন টিলা নামের কোনো জায়গা পাওয়া যায়নি। এ মামলার আসামিরা হলেন বর্তমান নির্বাহী প্রৌকশলী বিরল বড়ুয়া, সাবেক নির্বাহী প্রৌকশলী কাজী আবদুস সামাদ, সহকারী প্রৌকশলী জ্যার্তিময় চাকমা, উপ-সহকারী প্রৌকশলী রিগ্যান চাকমা, ঠিকাদার নাংচিং এন্টারপ্রাইজের চিংহন রাখাইন, ৪নং ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মামুনুর রশীদ এবং জেলা পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমা।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রৌকশলী বিরল বড়ুয়া বলেন, আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি। মামলা হয়েছে শুনেছি। এ বিষয়ে আপাতত কিছু বলতে পারছি না, সরাসরি বলবো।
জেলা পরিষদের সদস্য সবির কুমার চাকমা বলেন, আমি শুনেছি মামলা হয়েছে। তবে এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। যদি সরাসরি প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায় যে প্রকল্প দৃশ্যমান নয় এবং এলাকাবাসী সাক্ষ্য দেয় তবেই মামলা হতে পারতো।
সাইফুল উদ্দীন/এসজে/জিকেএস