নিজের টাকায় সড়কের খানাখন্দ ঠিক করেন শাহাবুদ্দিন সওদাগর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ০৯ জুন ২০২৩

নিজের টাকা খরচ করে বরগুনা পৌরশহরের অলিগলিতে বিভিন্ন সড়কের খানাখন্দ ঠিক করে চলেছেন শাহাবুদ্দিন সওদাগর নামের এক ব্যক্তি। অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে ও জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। তার এ কাজের প্রশংসা করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার পৌরশহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ স্মৃতি সড়ক এলাকায় বসবাস করেন শাহাবুদ্দিন সওদাগর। পেশায় একজন চুক্তিভিত্তিক রোলার চালক। তার নিয়মিত কাজ থাকে না। এতে অবসর সময়ে নিজ উদ্যোগে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হওয়া খানাখন্দ ঠিক করেন তিনি। বিশেষ করে রিকশা, ভ্যান, ছোট গাড়ি এবং মানুষের চলাচলে সমস্যা হয় এমন স্থানগুলোতে সাধ্যমতো কাজ করেন শাহাবুদ্দিন। পরিবারও এ কাজে উৎসাহ দিচ্ছে তাকে।

বরগুনার বাঁশবুনিয়া এলাকায় একটি সেতুর সংযোগ সড়ক দেবে যাওয়ায় গাড়ি নিয়ে সেতুতে উঠতে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। এ ভোগান্তি কমিয়ে আনতে পাথর, বালু, সিমেন্ট নিয়ে হাজির শাহাবুদ্দিন সওদাগর। নিজ হাতেই বালু, সিমেন্ট ও পাথর মিশিয়ে ঠিক করেন দেবে যাওয়া সড়কের কাজ।

সেতুটি দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন মাইঠা এলাকার বাসিন্দা সুজন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘তিনি নিজ উদ্যোগে যে কাজগুলো করেন তা সমাজের জন্য অবশ্যই ভালো কাজ। বিভিন্ন জায়গায় দেখেছি রাস্তার ছোট ছোট ভাঙা অংশ তিনি ঠিক করছেন।’

বড় লবণগোলা এলাকার বশির খলিফা ভ্যানে ফেরি করে বিভিন্ন জায়গায় ডাব বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এমন কাজ করা লোক আমি আর দেখিনি। শহরের বিভিন্ন সড়কের ছোট ছোট ভাঙা জায়গাগুলো বালু, সিমেন্ট কিনে ঠিক করেন তিনি।’

শাহাবুদ্দিন সওদাগরের ছেলে মাইনুল ইসলাম রুবেল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার বাবা যে কাজগুলো করেন তাতে আমরা খুশি। তার সঙ্গে যদি আরও দু-একজন এগিয়ে আসতো তাহলে বরগুনার ছোট ছোট যে সমস্যাগুলো তা দ্রুত সমাধান করা যেতো।’

এ বিষয়ে শাহাবুদ্দিন সওদাগর জাগো নিউজকে বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন সড়কে যেসব খানাখন্দ তৈরি হয়েছে সেগুলোর কারণে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বৃষ্টির সময় জমা পানির ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল বা কোনো গাড়ি গেলে পানি ছিটে এসে পথচারীদের গায়ে পড়ে। আবার অনেক সময় এসব জায়গা দিয়ে রোগী নিয়ে যেতেও সমস্যা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি একজন খেটে খাওয়া মানুষ, তেমন টাকা-পয়সা নেই। তাই বেশি কিছু করতে পারবো না। তবে আমার নিজের একটা স্লোগান আছে— ‘আমাদের বরগুনা আমরাই গড়বো, ইচ্ছে করলে সবই পারবো’। এ ইচ্ছাটাকে জাগ্রত করতে আমি একজন রোলার চালক হিসেবে আমার অভিজ্ঞতাটুকু রাস্তার খানাখন্দ ঠিক করার কাজে লাগিয়েছি।’

শাহাবুদ্দিন সওদাগর বলেন, একটি রাস্তা মেরামতের জন্য সরকারিভাবে টেন্ডার হতে প্রায় দু-তিন বছর সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যে টুকটাক কাজগুলো আমার মতো আরও অনেকে শুরু করলে মানুষের ভোগান্তি কম হবে। রাষ্ট্রেরও উপকার হবে।’

এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।