বিয়ে না দেওয়ায় টিকটকে কিশোরীর ছবি-ভিডিও, বাড়িতে হামলা বখাটের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০৮:৪১ পিএম, ২৬ জুলাই ২০২৩

ময়মনসিংহে বিয়ের জন্য রাজি করাতে না পেরে এক কিশোরীর শতাধিক ছবি ও ভিডিও টিকটকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বখাটের বিরুদ্ধে। কিশোরীর পরিবারে হামলাও চালিয়েছেন তিনি। ঘটনার পর থেকে ওই কিশোরী ও তার পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোরী (১১) স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মূল ঘটনা আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের নহাটা গ্রামে এমনই ঘটনা ঘটেছে।

অভিযুক্ত বখাটের নাম আসাদুল (২৮)। তিনি ওই গ্রামের বৃনহাটা এলাকার মৃত শামসু মিয়ার ছেলে।

আসাদুল মাদকাসক্ত ও সবসময় একটি ব্যাগে করে রামদা, রড, হাতুড়ি ও কাঠের লাঠি সঙ্গে নিয়ে ঘোরাফেরা করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার জানায়, গত ১০ মাস ধরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই কিশোরীকে উত্ত্যক্ত করে আসছেন আসাদুল। তিনি কিশোরীকে বিয়ের জন্য পরিবারকে চাপ দিয়ে আসছেন। সম্প্রতি বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে তারা দুটি সালিশ করেন। এতে আসাদুল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গোপনে ছবি তুলে ও ভিডিও করে টিকটকে ছেড়ে দেন।

কিশোরীর মা বলেন, ‘আসাদুল গোপনে ঘরের টিনের দরজা ছিদ্র করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে। ওই ছিদ্রগুলো আমি লাল স্কচটেপ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। তারপরও সারাদিন বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করে। সুযোগ পেলেই ছবি তুলে ও ভিডিও করে। আসাদুলের ভয়ে মেয়েকে অন্যের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছি। আসাদুল আমার মেয়ের অনেক ছবি ও ভিডিও টিকটকে ছেড়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বাড়িঘরে হামলা করেছে।’

থানায় করা অভিযোগে অভিযুক্ত আসাদুলের বয়স ৫২ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ তার বয়স ২৮ বছর। এছাড়া আসাদুল শুধু তাদের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। বাড়িঘরে হামলার বিষয়টি উল্লেখ নেই।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, ‘আমার বাড়িতে কী হয়েছে পুলিশ নিজেও দেখে গেছে। অভিযোগ লেখার সময় কয়েকবার বলেছি। কিন্তু কেন লিখলো না বুঝতে পারছি না।’

কিশোরীর প্রতিবেশী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা স্থানীয়ভাবে দুইবার সালিশ করেছি। কিন্তু আসাদুল কারোর কথা শোনে না। নেশা করে প্রতিদিন ওই কিশোরীর বাড়িতে এসে অত্যাচার করে।’

কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আসাদুল গোপনে আমার মেয়ের ছবি তুলে ও ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছে। তার যন্ত্রণায় মেয়েকে অন্যের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছি। আমি প্রশাসনের কাছে কঠিন বিচার চাই।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আসাদুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাওয়া ও জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হাসানের নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, অভিযোগতো আর আমি লিখি না। যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে তাহলে আবারও অভিযোগ নেওয়া হবে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ আহমেদ ভূঞা বলেন, বাদী যেভাবে অভিযোগ দেবে সেভাবেই লিখতে হবে। যদি এর ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।