মেহেরপুরের বাজারে দেখা মিলছে না আলুর

সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর হিমাগার থেকে আলু বের করছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে মেহেরপুরের বাজারগুলোতে দেখা দিয়েছে আলুর সংকট। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেহেরপুরের বড় বাজারে অন্য সবজির দেখা মিললেও আলু চোখে পড়েনি।
জানা গেছে, বড় বাজারের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে আলু সরবরাহ করা হয়। এখানকার আড়তদাররা উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার হিমাগার থেকে আলু সংগ্রহ করে জেলার চাহিদা পূরণ করেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের পাইকারি এবং খুচরা দাম নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। স্থানীয় বাজারে নির্ধারিত দরে এসব কৃষিপণ্য বিক্রি করতে নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষি বিপণন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে হিমাগারগুলো সরকার নির্ধারিত আলুর দাম মানছে না। এদিকে, বাড়তি দামে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরাও আলু আনছেন না।
বড় বাজারের আড়তদার আব্দুস সামাদ বলেন, সরকার আলুসহ কয়েকটি জিনিসের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ায় হিমাগার থেকে আলু সরবরাহ করছে না। সরকারের বেঁধে দেওয়া দর মানতে তারা নারাজ। পাইকাররাও বেশি দরে আলু কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বাজারে আলুর সংকট দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু আড়তদার বিকল্প পথে আলু আনলেও দাম বেশি।
তিনি আরও বলেন, সরকার বাজার নির্ধারণ করার আগেও একই দরে কিনতে হতো। হিমাগার থেকে আলু কিনে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ দিয়ে কেজিতে মাত্র ৫০ পয়সা মুনাফা থাকছে। তাই আড়তদাররা কেউ আলু কিনতে চাচ্ছেন না।
কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ভয়ে তারা আলু নিয়ে বসছেন না। চড়া দামে বিকল্প পথে আলু কিনে কম দামে বেচার সুযোগ নেই। এতে লোকসান গুনতে হবে।
আলু ব্যবসায়ী আক্কাস আলী জানান, আলু সরবরাহ না থাকায় বাজারে পড়েছে বিরূপ প্রভাব। বিশেষ ব্যবস্থায় গোপনে আসা আলু বিক্রি হচ্ছে অনেক বেশি দরে।
এদিকে, আলুর সরবরাহ কমায় বিপাকে আছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে চট পেতে যারা আলু ও সবজি বিক্রি করেন তাদের দুর্দশার সীমা নেই। কারণ সবজির মধ্যে আলু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। আলু না পাওয়ায় অন্য সবজি বিক্রিতেও ভাটা পড়েছে।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আড়তগুলো আলু উত্তোলন না করলেও বিকল্প পথে কিছু আলু আসছে খুচরা বাজারে। সংকট থাকায় এ আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজিতে। ফলে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সরকার নির্ধারিত ৩৫-৩৬ টাকা দরেই আলু বিক্রি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন তা অচিরেই দূর হবে।
আসিফ ইকবাল/এমআরআর/জিকেএস