‘ওরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে নিউজ করেছে’, বলেই পেটালেন বাবুর্চি
হাসপাতালের অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটনা।
আহতরা হলেন দৈনিক আজকের পত্রিকার ত্রিশাল উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম তুহিন, দৈনিক নয়াশতাব্দির উপজেলা প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান সুমন, দৈনিক গণমুক্তির উপজেলার প্রতিনিধি এস এম মাসুদ রানা। তাদের সঙ্গে ছিলেন দৈনিক দেশ সংবাদ পত্রিকার রিয়াদুল ইসলাম।
আহত সাংবাদিকরা জাগো নিউজকে জানান, সম্প্রতি হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে দৈনিক নয়াশতাব্দি ও আজকের পত্রিকার ফেসবুক পেজে ভিডিও প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ওই প্রতিবেদন দেখে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম তুহিনসহ অন্যদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
শনিবার দুপুর ১২টায় ফলোআপ প্রতিবেদন করতে হাসপাতালে যান সাংবাদিকরা। হাসপাতালের রান্নাঘরের দিকে যেতেই বাবুর্চি সোহরাব বলে ওঠেন, ওই সাংবাদিকরাই হাসপাতালের বিরুদ্ধে নিউজ করেছে, মার ওদের। এমন কথা বলেই তিনি এবং হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় জয়নাল তাদের মারতে মারতে হাসপাতাল থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। এসময় সাংবাদিকদের মোবাইল ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে আহত তিন সাংবাদিক বৃষ্টির কারণে হাসপাতালে অবস্থান করলেও তাদের সেখানে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বৃষ্টি কমলে তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন বলেও জানান আহত সাংবাদিকরা।
এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি একটু বাইরে ছিলাম। হাসপাতালে কে বা কারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে অবগত নই। আমি হাসপাতালের দিকে যাচ্ছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
হাসপাতালের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আপনি নিজেও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন কিছু নয়। আমি কাউকে হুমকি দিইনি।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়েছে এমন সংবাদে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কী কারণে হামলা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলামের নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এমআরআর/এএসএম