পেঁয়াজের কারসাজি : কারও ওপর দায় চাপাতে চায় না শুল্ক গোয়েন্দা
পেঁয়াজের কারসাজিতে কারও ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে না শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। আমদানিকারকদের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে, পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। একটি পেঁয়াজের জাহাজ আজও বন্দরে আসছে। শিগগিরই পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম।
এর আগে সোম ও মঙ্গলবার দুদিনে কারসাজি করে দাম বাড়ানোর অভিযোগে ৪৩টি পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।
ড. শহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায় নামিয়ে আনতে আমদানিকারকদের ডেকেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি, তারা কোথায় মাল বিক্রি করেছে, কত দামে কী পরিমাণ বিক্রি করেছে। তাদের নাম-ঠিকানা নেয়া হয়েছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করবো।
তিনি বলেন, আমদানিকারকরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। এরপর তিন-চার হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছে। এখন কোন পর্যায়ে মজুত আছে এগুলো যাচাই-বাছাই করছি। আগামীতে প্রয়োজন হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতিক্রমে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ডাকা হবে।
শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক বলেন, আমদানিকারকদের পেঁয়াজ আমদানির জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কারও কাছে মজুত যেন না থাকে সেটা নিশ্চিত করা। তবে কি পরিমাণ পেঁয়াজ এখন পর্যন্ত দেশে মজুত আছে, আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলেও তা জানাতে পারেনি শুল্ক গোয়েন্দা।
তিনি বলেন, বাজারে দ্রুত আমদানি পেঁয়াজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে শুল্ক গোয়েন্দা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যখনই বন্দরে পেঁয়াজ আসবে তখনই যেন খালাস করে দেয়া হয়।
অন্যদিকে তারা জানিয়েছেন, বন্দর থেকে সরাসরি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। আমদানিকারকরা কাদের কাছে কত দামে কত পরিমাণ বিক্রি করেছে, আমরা এসব তথ্য পেয়েছি। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলবো। তার নির্দেশক্রমে পরে পাইকারি ও আড়তদারদের ডাকা হবে। তবে পেঁয়াজ নিয়ে যারা অনৈতিক ব্যবসা করেছে তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ড. শহিদুল ইসলাম।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমরা কারও ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছি না। আমরা চাই বাজার সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসুক। এজন্যই ব্যবসায়ীদের ডাকা হয়েছে।
এদিকে শুল্ক গোয়েন্দা আমদানিকারকরা জানান, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশের বাজারে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকার যদি তাৎক্ষণিক আমাদের ডেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নিতো, তাহলে বাজার এতোটা অসহনশীল হতো না।
তারা জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজ কেজি ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
২৫০ টাকা পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে আমদানিকারকরা জানান, পেঁয়াজ যে দামে আমদানি করা হয়েছে তাতে দেশের বাজারে কোনো মতেই ভোক্তা পর্যায়ে ৯০ টাকার ওপর হওয়ার কথা নয়। কিন্তু মধ্যস্বত্ব কিছু লোক সংকটের সুযোগ নিয়ে দাম বাড়িয়েছে। তবে এরা কারা এটি বলতে রাজি হননি পেঁয়াজের আমদানিকারকরা।
এসআই/এমএসএইচ/পিআর