হাজারীবাগে চামড়া ক্লাস্টার: লেনদেন হচ্ছে ৬০ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২৩

রাজধানীর হাজারীবাগে গড়ে উঠেছে বাহারি ও মানসম্পন্ন চামড়া পণ্যের ক্লাস্টার। এ ক্লাস্টারে বছরে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। ক্লাস্টারটির পণ্যের মানোন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা-কর্মীর দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) আগারগাঁও পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘হাজারীবাগ এলাকায় লেদার প্রোডাক্ট ক্লাস্টারের সম্ভাবনা ও করণীয়’ সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মফিজুর রহমান, পরিচালক পর্ষদ সদস্য মির্জা নূরুল গণী শোভন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান এবং হাজারীবাগ লেদার ক্র্যাফটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তানিয়া ওয়াহাব।

মূল প্রবন্ধে এসএমই ফাউন্ডেশনের উপমহাব্যবস্থাপক আবু মঞ্জুর সাইফ বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের ক্লাস্টার ম্যাপিং স্টাডি অনুযায়ী রাজধানীর হাজারীবাগে পুরনো ট্যানারি পল্লীতে গড়ে ওঠা লেদার ক্লাস্টারটিতে চামড়া থেকে তৈরি জুতা, বেল্ট, মানিব্যাগ, জ্যাকেট, অফিসিয়াল ব্যাগসহ নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হয়। হাজারীবাগ ট্যানারি মোড় থেকে লেদার টেকনোলজি কলেজ পর্যন্ত হাজারীবাগ বাজার, ধানমণ্ডি ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড গলিসহ পুরো এলাকাজুড়ে প্রায় ৩৫০-৪০০ দোকান, শোরুম ও চামড়াজাত পণ্যের ছোট কারখানা রয়েছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, ক্লাস্টারটির বাৎসরিক লেনদেন প্রায় ৫০-৬০ কোটি টাকা।

দেশীয় বাজারে উন্নত মানের চামড়াজাত পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি ক্লাস্টারটির বেশ কিছু উদ্যোক্তা বিদেশেও পণ্য রপ্তানি করে থাকেন। হাজারীবাগ লেদার ক্লাস্টারের প্রায় সব উদ্যোক্তাই নিজস্ব শো-রুম থেকে সরাসরি পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করে থাকেন। পাশাপাশি চুক্তি ভিত্তিতে উদ্যোক্তারা দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের জন্য চামড়াজাত বহুমুখী পণ্য সরবরাহ করে থাকেন। ক্লাস্টারের বেশ কিছু উদ্যোক্তা বিদেশে পণ্য রপ্তানি করেন।

হাজারীবাগে চামড়া ক্লাস্টার: লেনদেন হচ্ছে ৬০ কোটি টাকা

এসএমই ফাউন্ডেশন ক্লাস্টারটির উন্নয়নে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ফাউন্ডেশনের সহায়তায় অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পণ্যের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণসহ অনলাইনে ক্লাস্টার পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে ফাউন্ডেশন হাজারীবাগ ক্লাস্টারে অনলাইন-মার্কেটিং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় ও আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলায় ক্লাস্টারের উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করে থাকেন। ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় চামড়াজাত পণ্যের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পর ইউরোপীয় বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা নাও থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি অথবা বিকল্প হিসেবে সম্ভাবনাময় খাত হতে পারে চামড়া শিল্প।

উদ্যোক্তাদের দাবি, চামড়াজাত পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন, পণ্য বহুমুখীকরণ, নীতিগত বাধা দূর করা, কমপ্লায়েন্স অনুসরণ, সহজ শর্তে ঋণ, শুল্ক ও কর অব্যাহতি এবং নগদ প্রণোদনাসহ পরিবহন ও বন্দরে লজিস্টিক সুবিধা দেওয়া হলে সম্ভাবনাময় এ খাত দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ বলেন, এখানকার ছোট চামড়া পণ্যের কারখানার পরিবেশ ছাড়পত্র প্রাপ্তি সহজ করার পাশাপাশি সাভারের ট্যানারি পল্লীর পাশে উদ্যোক্তাদের জায়গা বরাদ্দের চেষ্টা করছে সরকার। চামড়া পণ্যের ক্লাস্টারের উন্নয়নে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

এনএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।