মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ আত্মসাৎ: জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ২৩ মার্চ ২০২৩

চারটি মিউচুয়াল ফান্ডের প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশন (বিএসইসি)। তহবিলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা ইউনিভার্সেল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনস (ইউএফএস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হামজা আলমগীর ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান এবং ইউএসএফ’র পরিচালক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে এ মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোং এবং রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টি কাউন্সিলে প্রতিবেনদ পাঠানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত এ দুই নিরীক্ষা ফার্ম পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা কর্যক্রম করতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার বিএসইসি থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি গঠিত তদন্ত কমিটির দাখিল করা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর বিভিন্ন বিধি ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

ইউএফএস-আইবিবিএল শরিয়া ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস-পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড, ইউএফএস-পদ্মা লাইফ ইসলামিক ইউনিট ফান্ড এবং ইউএফএস-ব্যাংক এশিয়া ইউনিট ফান্ড এ চার মিউচুয়াল ফান্ডের প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে ইউনিভার্সেল ফাইন্যান্সিয়াল সলিউশনস’র বিরুদ্ধে। এরপর প্রাথমিক তদন্ত এ অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ প্রায় বিএসইসি।

বিএসইসির তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় এখন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসি যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে-
>সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর সংশ্লিষ্ট বিধি মোতাবেক সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফিন্যান্সিয়াল সলিউশনস লিমিটেড-এর নিবন্ধন সনদ কেন বাতিল হবে না এ মর্মে নোটিশ জারি করা।

>জালিয়াতিপূর্বক অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি ইউনিভার্সাল ফিন্যান্সিয়াল সলিউশনস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হামজা আলমগীর ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, উক্ত কোম্পানির পরিচালক, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ মোতাবেক মামলা দায়ের করা।

>ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি হিসেবে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ মোতাবেক সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানির পরিচালকরা, কর্মকর্তারা তথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হতে পাচার করা তহবিল, অপরাধলব্ধ আয়, অবৈধ ব্যয় তথা অনাদায়কৃত অর্থ পুনরুদ্ধার/ পুনর্ভর করার নিমিত্তে বিশেষ নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

>ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি এবং কাস্টডিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-র ট্রাস্টি এবং কাস্টডিয়ান বিভাগে তৎকালীন কর্মরত কর্মকর্তাদেরকে সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ এর সংশ্লিষ্ট বিধি মোতাবেক কেন শাস্তি আরোপ করা হবে না এ মর্মে নোটিশ জারি করা।

>অনিয়ম করা ৪টি ফান্ডের বিধিবদ্ধ নিরীক্ষা ফার্ম আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোং, রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং এবং সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনটি ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টি কাউন্সিলে পাঠানো হবে। এ বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত উভয় নিরীক্ষা ফার্মকে এবং এর সব অংশীদারকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সব ধরনের সমন্বিত বিনিয়োগ স্কিম (যথা-মিউচুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী সব প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউরান্স কার্যক্রম পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া।

এমএএস/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।